নিজস্ব সংবাদদাতা: যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়, আর বাল্য বিবাহ নয়। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই রাজ্যকে বাল্যবিবাহ মুক্ত (Child Marraige Free) রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার যার শুরুটা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur)থেকে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাপ্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, আইন আছে, প্রচেষ্টাও আছে কিন্তু সমস্যা সচেতনতার। তাই আইন, প্রশাসন বা পুলিশের উদ্যোগ স্বত্ত্বেও রোখা যাচ্ছেনা বাল্য বিবাহ। সেই ফাঁক পূরণ করতেই এবার নিবিড় উদ্যোগ জেলা প্রশাসনের। উদ্যোগ তৃনমূল স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। শুধু সচেতনতাই নয় সঙ্গে নজরদারি রাখতে তৈরি হচ্ছে চার স্তরীয় কমিটি। দেখা নেওয়া যাক সেই কমিটির স্বরূপ।
প্রথম ধাপের কমিটি একেবারে গ্রাম বা বুথ স্তরে। এখানে থাকছেন নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য, ওই গ্রাম বা বুথে কোনও শিক্ষক থাকলে তিনি। একজন ছাত্র বা ছাত্রী, একজন অভিভাবক, আইসিডিএস কর্মী। এই কমিটির কাজ হচ্ছে মূলতঃ নজরদারি। গ্রামে বা বুথ এলাকায় কোনও বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার থাকলে এই কমিটি খোঁজ খবর করবেন গ্রামের ওই পাত্র বা পাত্রীর বিবাহযোগ্য সরকার নির্ধারিত বয়স হয়েছে কিনা? এই ক্ষেত্রে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যের ওপর স্বাভাবিক দায়িত্ব অর্পণ করা হচ্ছে যাতে তিনি নিশ্চিত করেন কোনও বাল্যবিবাহ হচ্ছেনা। নিয়ম
পরবর্তী কমিটি তৈরি করা হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে। এই কমিটিতে প্রধান ছাড়াও, একজন বা একাধিক শিক্ষক অথবা শিক্ষিকা এছাড়াও পড়ুয়া, আইসিডিএস সুপারভাইজার ইত্যাদিরা থাকবেন। ব্লক স্তরে বিডিও, সভাপতি, চাইল্ড ডেভলপমেন্ট প্রোজেক্ট অফিসার, থানার ওসি, ইত্যাদিরা থাকবেন। অন্যদিকে জেলাস্তরে জেলাশাসক ছাড়াও একজন অতিরিক্ত জেলাশাসক, বিভিন্ন আধিকারিক, জেলার কোনও একজন পুলিশ আধিকারিক ইত্যাদিদের নিয়ে এই কমিটি তৈরি হচ্ছে।
পাশাপাশি থাকছে কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যারাও। বাল্য বিবাহ রোধ করার জন্য এই ক্লাবগুলিকে নিবিড় প্রচারে নামানো হচ্ছে। এলাকা জুড়ে প্রচার ছাড়াও বৃহৎ এলাকাজুড়ে সাইকেল র্যালি শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। যেমন বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সদরের পাঁচখুরি দেশবন্ধু বিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে একটি আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক আয়েশা রানী স্বয়ং। আগামী সপ্তাহে নারায়নগড় ব্লকের খুড়শিতেও একটি র্যালির উদ্বোধন করার কথা তাঁর।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় অধিক বাল্যবিবাহের রেকর্ড রয়েছে এমন অঞ্চলগুলি প্রথমে বেছে নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে সেই এলাকাটিকে ধরে নিয়ে কাজ করা হবে। এইভাবে একেকটি অঞ্চল, ব্লককে বাল্যবিবাহ মুক্ত করে সমগ্র জেলাকেই বাল্যবিবাহ মুক্ত করা হবে আর এই ভাবেই সারা রাজ্যকে আগামী আড়াই বছরের মধ্যে বাল্যবিবাহ মুক্ত জেলা ঘোষণা করতে উদ্যোগী হয়েছেন জেলা প্রশাসন।