Saturday, July 27, 2024

Midnapore Tmc Men arrested: নারায়নগড়ে তৃণমূল কর্মী খুনে অভিযুক্ত ৩ তৃনমূল কর্মীকেই গ্রেপ্তার করল পুলিশ! গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দলের

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিল তৃনমূল কংগ্রেস। রেহাই দেওয়া হলনা দলীয় কর্মী খুনে অভিযুক্ত দলীয় কর্মীদের। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড় থানা এলাকায় খুন হয়েছিলেন এক তৃনমূল কর্মী। সোমবার সেই ঘটনায় দলেরই এক প্রভাবশালী যুবকর্মী সহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করল নারায়নগড় থানার পুলিশ।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে
নিহতের পরিবার

মঙ্গলবার অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করে এক অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বাকি ২জনের জেল হেফাজত হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত নারায়নগড়ের বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর কর্মীদের বার্তা দিতেই এই কড়া পদক্ষেপ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি ঘটনাটি ঘটেছিল। অভিযোগ ওইদিন রাতে ফোন করে ডাকা হয়েছিল একনিষ্ঠ তৃনমূল কর্মী সৌভিক দোলাইকে। বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে জরুরি নির্বাচনের প্রয়োজনে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। এরপরই গুলিবিদ্ধ হন সৌরভ। আহত সৌরভকে উদ্ধার করে প্রথমে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় সৌরভের। বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে এই ঘটনার দায় চাপানো হয়েছিল বিজেপির ওপর যদিও সৌরভের পরিবার প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল ঘটনার পেছনে দলেরই একাংশ রয়েছে।

তখনকার মত ঘটনা ধামাচাপা পড়ে গেলেও ভেতরে ভেতরে ফুঁসছিলেন তৃনমূলের অন্যগোষ্ঠী। বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পরেও সেই ক্রোধ যায়নি বরং বিপুল জয়ে উৎসাহিত হয়ে এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীকে কোনঠাসা করার উদ্যোগ নেয়। মাত্র মাস খানেক আগে নারায়নগড় থানার বেলদায় দলের একটি সাংগঠনিক সভায় প্রকাশ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে নারায়নগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট বনাম ওই এলাকার ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের অনুগামীরা। খোদ জেলা সভাপতির উপস্থিতিতে এই ঘটনায় তীব্র অস্বস্তিতে পড়ে দল।

ঘটনার রেশ গিয়ে পড়ে হেমচন্দ্র গ্রামপঞ্চায়েতে একটি বিজয়া সম্মিলনীতে। কিছুদিনের মধ্যেই ফের দুই গোষ্ঠী বচসায় জড়িয়ে পড়ে বড়মোহনপুরে। পতাকা বাঁধতে গিয়ে আক্রান্ত হন কয়েকজন কর্মী। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের আবারও সমস্যা হয় বাসুটিয়া সহ কয়েকটি গ্রামে। ঘটনা এমনটাই আকার ধারন করে যে প্রায় প্রতিটি জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে পড়ছে যে দলের তরফেই পুলিশকে বার্তা দেওয়া হয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে গোটা নারায়নগড় বিধানসভা এলাকা জুড়েই এই দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে তা রীতিমতো মাথা ব্যথার কারন হয়ে উঠেছে দল এবং প্রশাসনের। সেই কারণেই পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থান নেয়। দলের তরফে সায় মেলে পুলিশের অবস্থানের সমর্থনে। এরপর আর সময় নষ্ট করেনি পুলিশ। শুরু হয় পুলিশি অভিযান। আর সেই অভিযানেই প্রথম দফায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩ তৃনমূল কর্মী অমিত মন্ডল, সীতা রাম মুর্মু, সন্দীপ মেটিয়াকে। এঁদের মধ্যেই অমিত মূল অভিযুক্ত। যদিও তৃণমূল ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ্র বলেন, ওই ঘটনার সাথে তৃণমূল জড়িত নয়।

যদিও বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি মিহিরবাবুর অনুগামীরা। খোদ মিহিরবাবু এখনও দাবি করে যাচ্ছেন ধৃতরা এই ঘটনায় জড়িত নয়। বিষয়টি আইনী বিষয় ও পুলিশি তদন্তের ব্যাপার বলে ব্লক সভাপতি জানিয়েছেন, তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসবে অর্থাৎ এই ঘটনার পরও নিজেদের অবস্থানেই অনড় তৃনমূলের একটি অংশ।
এদিকে ওই তিনজনের গ্রেপ্তারে খুশি খুন হওয়া যুবকের পরিবার। রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের আবেদন দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক। নিহত সৌভিকের মা সুমিতা দোলাই এদিন গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে তিনি বলেন, ছেলেকে যেভাবে যারা খুন করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি হোক। ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

- Advertisement -
Latest news
Related news