নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘যে বিজেপি সেই তৃনমূল’ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিএমের এই প্রচারের সারবত্তা প্রায় স্বীকারই করে নিলেন সদ্য প্রাক্তন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীলিপ ঘোষ। সোমবার মেদিনীপুর শহরে দলীয়কর্মীদের দ্বারা আহুত এক বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এসে এমনটাই জানিয়ে দিলেন মেদিনীপুর সাংসদ।
রবিবার বিজেপির ঘর ছেড়ে ফের তৃনমূলে ফিরে গিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, এর আগে একে একে ঘর ওয়াপিসিতে গেছেন মুকুল রায় সহ আরও অনেকে। শুধু তাই নয় খোদ বিজেপির ঘর থেকে চলে গিয়েছেন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় সহ একগুচ্ছ বিধায়ক। বিধানসভা নির্বাচনের কয়েকমাস পরে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ তথা রাজ্য বিজেপির এই উপলব্ধি তাই সিপিএমের ‘তৃনমূল বিজেপি ভাই ভাই’ শ্লোগানকেই মান্যতা দিয়ে ফেলল।
রবিবার ত্রিপুরায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে ফেরার পরই খড়গপুরে দাঁড়িয়ে দীলিপ ঘোষ ফেসবুকে পোষ্ট করে বলেছিলেন, দলে এখনও অনেকে বিশ্বাসঘাতক রয়ে গেছে। ভাবা হয়েছিল এই বিশ্বাসঘাতকের দলে তিনি বোধহয় শুধু
তৃনমূল থেকে আসা লোকেদের বুঝিয়েছেন কিন্তু সোমবার সাংবাদিকদের কাছে তিনি পরিস্কার করে দেন, ওরাতো (তৃনমূল থেকে বিজেপিতে আসা) আমাদেরও (আগে থেকেই বিজেপি ) অনেক লোক রয়েছে যারা দলে থেকে তৃনমূলের হয়ে ভোট করিয়েছে।
দিলীপ ঘোষ বলুন আর নাই বলুন জঙ্গলমহল সহ সমগ্র দক্ষিনবঙ্গেই যে বিজেপির লোকেরা তৃণমূলে ভোট দিয়েছে তা নির্বাচনের ফলাফলেই প্রমান হয়ে গেছিল। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরে যেখানে বিজেপি লোকসভায় অপ্রতিহত ছিল সেখানে কার্যত শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে বিজেপিকে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দীলিপ ঘোষের এই স্বীকারোক্তি একটি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মাত্র। আর সেই স্বীকৃতি তলায় বিজেপি তৃনমূলের আঁতাতেরও বটে।
বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সাংবাদিকের সামনে দাঁড়িয়ে যখন এই উপলব্ধি ব্যক্ত করেছেন তখন তাঁর পাশেই রয়েছেন বিজেপির সদ্য মনোনীত রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ঘোষের এই বক্তব্যকে কার্যত মাথা নেড়ে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। যার অর্থ বিজেপির মধ্যে থেকে তৃনমূলের হয়ে কাজ করার তত্ত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিও।
সেই বিশ্বাসঘাতকের দল যে এখনও দলের মধ্যেই রয়েছে এবং তারা যে আদি বিজেপিরই লোক তা স্বীকার করেই ক্ষান্ত হননি ঘোষ। সঙ্গে এটাও বলেছেন যে, তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। একে একে সবাইকে চিহ্নিত করা হবে। দলীয় অন্তর্ঘাত নিয়ে চিন্তিত বিজেপিকে সম্ভবতঃ আরও দুশ্চিন্তায় ফেলেছে আগত পৌর নির্বাচন। আর সে কারণেই বিজেপি সেজে থাকা ছুপা তৃণমূলীদের দ্রুত চিহ্নিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে দীলিপ ঘোষরা।