নিজস্ব সংবাদদাতা : রাত পোহালেই দুর্যোগের আশঙ্কা! বঙ্গোপসাগরে শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ (Cyclone Jawad)। আবহাওয়াবিদদের অনুমান ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলের কোনও একটি জায়গায় ভূমিস্পর্শ (Landfall) করবে প্রলয়ঙ্করী ওই ঘূর্ণিঝড় আর শেষ বেলায় তারই ল্যাজের ঝাপটায় বিধ্বস্ত হতে পারে বাংলার উপকূল, বিশেষ করে ওড়িশা লাগোয়া দিঘা (Digha)। শনিবার থেকে অকালবর্ষণের শাসন চলবে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলে। আর সেই কারণেই শুক্রবার বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র এবং রাজ্যের মোট ৬টি উদ্ধারকারী দল দিঘায় এসে পৌছালো দিঘায়।
পরিবর্তন হতে শুরু করেছে দিঘার আবহাওয়া। শুক্রবার সকাল থেকেই উপকূলের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও সমুদ্র অবশ্য শান্ত থাকায় সপ্তাহান্তে স্নানের মজা শুক্রবারই নিয়ে নিয়েছেন পর্যটকরা। কারন শনি থেকে সোমবার সমুদ্র স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। যে কারনে শুক্রবার সমুদ্রস্নানের ঢল নামতে দেখা গিয়েছে। এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুক্রবারই দিঘা উপকূলে নেমে পড়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) দুটি দল। প্রতিটি দলে ১৮জন করে সদস্য রয়েছেন। অন্যদিকে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (SDRF) সমপরিমান সদস্য যুক্ত ৪টি দল নেমেছে। দিঘায় নেমেই তাঁরা প্রাক সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসাবে সচেতনতা মূলক প্রচার শুরু করে দিয়েছেন।
এদিকে আগামী ৩দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় প্রতিটি মৎসজীবীদল ট্রলার সমেত সমুদ্র থেকে ফিরে এসেছেন। কোনও দল রয়ে গেল নাকি তার খোঁজ নিচ্ছে প্রশাসন। ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী বা Indian Cost Gurd তৎপর রয়েছে সমুদ্রের ওপর নজর রাখার জন্য। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রস্নান ও সমুদ্রের ধারে কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দিঘায় একটি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম ছাড়াও এছাড়াও জেলা, মহকুমা ও ব্লকস্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা ও ঝাড়গ্রাম এবং হাওড়ায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। কলকাতা, হুগলি ও নদিয়াতে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। ঝড়বৃষ্টির জোরালো আঘাত পড়তে পারে দিঘায়। সমুদ্রের জলস্ফীতি ঘটার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট চলবে রবিবার পর্যন্ত। ফলে বিপর্যস্ত হতে পারে জনজীবন। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন।
এদিকে জাওয়াদের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে এমন নিচু এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই মানুষজনকে সরানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। তার জন্য তৈরি রাখা হচ্ছে ৪৩ টি সাইক্লোন সেন্টার। সব মিলিয়ে অতন্দ্র প্রহরায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন চোখ রাখছে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধির ওপর।