নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গেছেন রুগী। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেই ভর্তি নিখোঁজ রুগীর স্ত্রী। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। শনিবার এমনই ঘটনায় ইতিমধ্যেই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন রুগীর পরিবার। রবিবার সকাল অবধি খোঁজ মেলেনি রুগীর। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। পরিবারের অভিযোগ হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স এবং কর্মীরা রুগীর পরিবারের সঙ্গে সহযোগিতা বা সহমর্মিতার বদলে দুর্ব্যবহার করেছেন।
জানা গেছে নিখোঁজ রুগীর নাম দীলিপ দন্ডপাট। মধ্য বয়স্ক কৃষিজীবী দিলীপের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়নগড় থানার নাড়মা এলাকায়। কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন দীলিপ। জ্বর না সারায় ২রা ডিসেম্বর তাঁকে স্থানীয় মকরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসকরা তাঁকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ২ তারিখই তাঁকে হাসপাতালের আ্যম্বুলেন্সই রুগীর পরিবার খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২ তারিখ থেকে ৪ তারিখ সকাল অবধি হাসপাতালেই ছিলেন।
দিলীপের ছেলে সঞ্জয় জানিয়েছেন, ‘শনিবার সকাল অবধি বাবা ভালই ছিলেন। সকালে হাসপাতালের নার্স বাবাকে একটা ইঞ্জেকশন দেন। তারপরই বাবার গলা বসে যাওয়ার মত হয়। আমার কেমন সন্দেহ লাগে। বাইরে মা ছিলেন। মাকে বিষয়টা জানাই। এরপরই আমি টিফিন করে মা কে নিয়ে হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে দেখি নিজের বেডে নেই বাবা। আমরা বাথরুম সহ নানা জায়গায় খুঁজি কিন্তু বাবাকে পাইনি। নার্স, নিরাপত্তারক্ষীদের বিষয়টি জানাতে তাঁরা আমাদেরই খোঁজ খবর নিতে বলেন। আমার বাবা এখানকার কিছুই জানেননা, কোথায় যাবেন?’
রুগীর স্ত্রী কাকলী দন্ডপাট জানান, ‘ আমার ছেলে আমাকে জানায় ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই আমার স্বামী কেমন আনমনা হয়ে যান। স্বামীকে না পেয়ে নার্সদের কাছে গিয়ে জানাতে উল্টে নার্সরা আমাদের ধমকাতে থাকেন যে, আমরা যেন কাগজে সই করে জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি নিয়ে চলে যাই নচেৎ আমাদেরই বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে। কয়েকঘন্টা পরেও খোঁজাখুঁজির করে না পেয়ে থানায় অভিযোগ করি আমরা।
এদিকে থানায় অভিযোগ করার পর ফের হাসপাতালে আসেন মা ও ছেলে। চলে আরেকদফা খোঁজ খবর। এই সময় ফের বচসা শুরু হয় হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন কাকলী। খিঁচুনি শুরু হয়ে যায় তাঁর, অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁকে ভর্তি করতে হয় ওই হাসপাতালেই। আপাততঃ সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন কাকলী। পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে।