Saturday, July 27, 2024

Big Catch Kharagpur: খড়গপুর পুলিশের বড়সড় সাফল্য! কলকাতা থেকে গ্রেফতার লরি চালকের খুনি, খড়গপুর থেকে গ্রেফতার ব্যবসায়ী, উদ্ধার পৌনে ৪ লাখ টাকা

Kharagpur police got great success. Dumdum and Kharagpur Police arrested a businessman from Kharagpur on charges of buying looted goods and the main killer of lory driver from Kolkata . West Midnapore District Superintendent of Police Dinesh Kumar said not only the killer but also the accused who bought the lorry's contents had been arrested. 3 lakh 70 thousand rupees has also been recovered. Note that on 27th December 'KGP Bangla' published the tragic murder case. The incident was brought to light by the Kharagpur Rural Police centering on a body recovered from Rupnarayanpur in Kharagpur. It is learned that the body belonged to a lorry driver named Bablu Prajapati. According to police sources, the real name of the person who killed the lorry driver and fled with the lorry is Niranjan Shaw. Niranjan, 38, originally lived in Bihar but rented a house in Dumdum. On the other hand, the name of the businessman arrested from Bara Ayma of Kharagpur is Sandeep Jaswal.

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: বড়সড় সাফল্য পেল খড়গপুর পুলিশ। ১৮ দিন তল্লাশি চালিয়ে দমদম ও খড়গপুর থেকে মূল খুনি ও লুটের মাল কেনার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, শুধু খুনিই নয় তার সাথে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই লরির সামগ্রী যে কিনেছিল সেই অভিযুক্তকে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে
বাঁদিক থেকে ব্যবসায়ী সন্দীপ, খুনে অভিযুক্ত নিরঞ্জন

উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ৩ লক্ষ ৭০হাজার টাকাও। উল্লেখ্য ২৭শে ডিসেম্বর ‘KGP বাংলা’ প্রকাশ করেছিল সেই লোমহর্ষক খুনের ঘটনা। খড়গপুরের রূপনারায়নপুরে উদ্ধার হওয়া একটি মৃতদেহকে কেন্দ্র করে খড়গপুর গ্রামীন পুলিশ প্রকাশ্যে আনে সেই ঘটনা। জানা যায় ওই মৃতদেহটি আসলে বাবলু প্রজাপতি নামের এক লরি ড্রাইভারের।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে লরি চালককে খুন করে লরি নিয়ে যে ব্যক্তি পালিয়ে ছিল সেই খুনির আসল নাম নিরঞ্জন শা। ৩৬ বছর বয়সী নিরঞ্জনের আসল বাড়ি বিহারে কিন্তু সে দমদমে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত। তার স্ত্রী ও ১৩ বছরের ছেলে রয়েছে। নিরঞ্জনের পেশাই হল চালক সেজে অন্য লরির চালকদের সাথে আলাপ করা এবং দূরপাল্লার লরিতে সহযোগী হিসেবে উঠে পড়া। তারপর সুযোগ বুঝে লরির আসল চালককে খুন করে মাল সহ লরি নিয়ে পালানো। এই ক্ষেত্রে অন্যের ড্রাইভিং লাইসেন্সে নিজের ছবি লাগিয়ে অন্যের নামেই নিজেকে পরিচয় দিত। এভাবেই হলদিয়াতে বীরেন্দ্র মাহাতো সেজে বাবলুর লরিতে উঠে পড়েছিল সে।

ঘটনায় খড়গপুরের বড় আয়মা থেকে ৪০ বছরের এক ব্যবসায়ী সন্দীপ জসওয়ালকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সন্দীপ প্লাস্টিক কনা বিক্রির ব্যবসা করত। সে ওই লুট হওয়া লরির পলিমার কিনেছিল। তারপর তা নিজের নিমপুরার গো-ডাউনে লুকিয়ে রাখে। তার আগে প্যাকেট থেকে সরিয়ে নেয় প্যাকেটের আসল লোগো। এরপর অন্য কোম্পানির লোগো লাগিয়ে তা ধাপে ধাপে বিক্রি করছিল সে। এর কাছ থেকেই পুলিশ পলিমার বিক্রির ৩লক্ষ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। পুলিশের অনুমান আরও বেশ কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে এই ঘটনায়। লুট হওয়া সামগ্রীর টাকা তাঁদের কাছেও থাকতে পারে। পুলিশ তাঁদেরও খোঁজ করছে।

উল্লেখ্য উত্তর ২৪ পরগনার বাবলু ২৩ ডিসেম্বর হলদিয়া থেকে ২৯ লক্ষ টাকা মূল্যের পলিমার বোঝাই করে মহারাষ্ট্রের লাতুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল কিন্তু ২৪তারিখ বেলা সাড়ে ৮টার পর লরি বা চালক কারুই খোঁজ মেলেনি। ওই দিনই খড়গপুরের রূপনারায়নপুরে মিলেছিল বাবলুর দেহ। পুলিশ জানিয়েছিল, মৃতদেহটির মুখমন্ডলেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। অনেকটা চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে গেলে যেমনটা হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল চলতি গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই জায়গায় রাস্তার পাশে বেশকিছু পাথর পড়ে থাকায় দুর্ঘটনার তত্ত্ব কিছুটা দৃঢ় হয়। ময়নাতদন্তেও সেরকমই ইঙ্গিত মেলে। মৃতের কাছ থেকে কোনও নাম পরিচয়ের কাগজ না মেলায় মৃতদেহটি অ-শনাক্ত অবস্থায় খড়গপুর মর্গেই পড়ে থাকে। পরে লরির মালিক খড়গপুরে এসে জানায় ওই মৃতদেহ আসলে তাঁরই লরির চালক বাবলু প্রজাপতির।

লরির মালিক পুলিশকে জানিয়েছিল , ২৩ তারিখ হলদিয়ায় পলিমার লোড করার পর বাবলু তাঁকে জানায়, তাঁর শরীর ভালো লাগছেনা। এমন অবস্থায় একা তাঁর পক্ষে মহারাষ্ট্রের লাতুর অবধি যাওয়া সম্ভব নয়। তার একজন সহকারী চাই। এই অবস্থায় হলদিয়া থেকেই বীরেন্দ্র মাহাত নামে এক চালককে সঙ্গে নেয় বাবলু। যে আসলে বাবলুকে ফাঁদে ফেলে তার সহযোগী হিসেবে ট্রাকে উঠেছিল সে এই নিরঞ্জন শা। পুলিশ জানিয়েছে, লরিতে নিরঞ্জনকে সহযোগী হিসেবে নেওয়ার আগে বাবলু একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স লরির মালিককে হোয়াটস্যাপ করে পাঠায়। আসলে ওই ড্রাইভিং লাইসেন্সে নিজের ছবি লাগিয়ে খুনি নিরঞ্জন শা ওই লাইসেন্স নিজের বলে চালিয়েছিল। তারপর খড়গপুরের কাছাকাছি কোথাও খাবারের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে অথবা মদ খাইয়ে বাবলুকে অচেতন করে খুন করার পর তার দেহ ফেলে যায় নিরঞ্জন । এরপর খড়গপুরে রেশমি মেটালিকের উল্টো দিকে ফৌজি ধাবায় বিশ্রাম নিয়েছিল সে। ওই দিন ফৌজি ধাবায় বিকাল অবধি গাড়িটি ছিল বলে জানা গেছে। তারপর নিমপুরায় সন্দীপের গোডাউনে মাল খালি করে লরি নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় একে একে গাড়ির জিএপিস সিস্টেম কেটে ফেলা, ফার্স্টট্র্যাক কোড নষ্ট করা এমনকি লরির গায়ে থাকা মালিকের নাম ও ফোননম্বর ঢেকে দেওয়া স্টিকার দিয়ে।

পুলিশ শুরুতেই সন্দেহ করেছিল বীরেন্দ্র পরিচয়ে থাকা ব্যক্তি আদৌ বীরেন্দ্র নয়। দুষ্কৃতি বীরেন্দ্রর কাগজপত্র জাল করে নিজের ছবি দিয়ে চালিয়েছে। একজন দুষ্কৃতি তাঁর স্বনামে এতবড় দুষ্কর্ম সচরাচর করেনা। ঘটনাও তাই, পুলিশ বীরেন্দ্রের খোঁজ করতে গিয়ে দেখে সে ডানকুনির কাছে একটি লরির বালি খালি করছে। পুলিশের কাছে সম্বল মাত্র ছিল নিরঞ্জনের আসল ছবিটি। এরপর বিভিন্ন মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করতে করতে মঙ্গলবার নিরঞ্জনের দমদমের আস্তানায় পৌঁছে যায় পুলিশ। প্রায় একই সময় বড় আয়মা থেকে গ্রেফতার হয় সন্দীপও। পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশের এক আধিকারিক জানান, নিরঞ্জন অত্যন্ত নৃশংস খুনি এবং লুটেরা। খড়গপুর এলাকায় আরও লরি লুটের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে সে। চালককে খুন করতে তার হাত কাঁপতনা। একটি মোবাইল ভয়েস রেকর্ড থেকে পুলিশ নিরঞ্জনের কথোপকথনের একটি অংশ পেয়েছে। যেখানে নিরঞ্জনকে বলতে শোনা গেছে, “এরপর থেকে আর গোটা বডি ফেলে রাখবনা। কুচি কুচি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেব যাতে পুলিশ চিনতে না পারে দেহটি কার!’

- Advertisement -
Latest news
Related news