নিজস্ব সংবাদদাতা: কর্তার ইচ্ছায় কর্ম! তাই আরও ৪দিন জেলে থাকছেন DYFI রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee)। মীনাক্ষী ছাড়াও ৪দিনের জেল হেফাজত হয়েছে তাঁর ১৫ জন সহযোদ্ধার। ছাত্র নেতা আনিস খানের রহস্যমৃত্যুতে বিচারের দাবিতে শনিবার হাওড়ার পাঁচলায় গ্রামীণ পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সহ একাধিক বাম ছাত্রনেতা ও কর্মীরা। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ সুপারের অফিসে হামলার অভিযোগে ধৃত ১৬ জন SFI এবং DYFI কর্মীকে চার দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন হাওড়া আদালতের বিচারক। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশকে আক্রমন, এমনকি খুনের চেষ্টা সহ একাধিক অপরাধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছিল।
রবিবার DYFI রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়সহ ১৪ জনকে হাওড়া আদালত একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। বাকি দু’ জনকে এক দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আজ ১৬ জনকে হাওড়া আদালতের ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হয়। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী তাদের জামিনের জন্য আদালতের সওয়াল করেন। সরকারি আইনজীবী তাদের জামিনের বিরোধিতা করেন। অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী মিহির বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁরা পুলিশ সুপারের অধীনে কোন তদন্তে আস্থা রাখতে পারছেন না। প্রকৃত তদন্তের জন্য তারা CBI তদন্তের দাবি করছেন। আগামী ৪ ই মার্চ অভিযুক্তদের ফের হাওড়া আদালতে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদে SFI ও DYFI-এর কর্মসূচিতে তুলকালাম কান্ড বেঁধে গিয়েছিল পাঁচলায়। একইভাবে এসপি অফিসের সামনে ব্যাপক গন্ডগোল শুরু হয় শনিবারও। পুলিশকে লক্ষ্য করে লাগাতার বোতল ও ইট পাথর বৃষ্টি চলে। যদিও যদিও তাঁদের সমর্থকদের কেউ ইট ছোড়েনি বলে জানিয়েছিলেন যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সেই সংঘর্ষে আহত হয় বেশ কয়েকজন। বিক্ষোভকারীদের রুখতে পালটা কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। গ্রেফতার হন DYFI নেত্রী মীনাক্ষ্মী মুখোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী।
আনিসের মৃত্যু নিয়ে SFI এবং DYFI-এর প্রতিবাদের পরদিনও দফায় দফায় বিক্ষোভ চলে পাঁচলায়। SP অফিস ঘিরে বিক্ষোভের পাশাপাশি জাতীয় সড়কে বসে পড়ে পথ অবরোধ করেন সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি চরম বিশৃঙ্খলা আকার নেয়। জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভের মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এমনকি পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় RAF। উত্তেজিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ইটবৃষ্টি শুরু করে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেলও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই অবরোধকারীদের বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।
শনিবার পুলিশের লকআপে ধৃতদের পোশাক খুলিয়ে অন্তর্বাস পরিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন ধৃতদের আইনজীবী। আদালতে বলেছিলেন ওই অবস্থাতেই বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। সেই মারে গুরুতর আঘাত থাকা স্বত্ত্বেও তাঁদের ‘ফিট’ বলে দেখানোর অভিযোগও উঠে ছিল। বিচারক তাঁদের পুনরায় ডাক্তারি পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয় পুলিশকে। আইনজীবী মিহির বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওই পরীক্ষায় ১১ জনের শরীরেরই আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। শুধু মীনাক্ষীর শরীরেই ৬ জায়গায় আঘাত রয়েছে। এদিন মীনাক্ষীদের জেলে যাওয়ার পথে প্রিজনভ্যানে ওঠানোর সময় সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে যান। উল্লেখ্য মঙ্গলবারও কলেজস্ট্রিটে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে SFI ও DYFI.