নিজস্ব সংবাদদাতা: আইআইটি খড়গপু্র (IIT Kharagpur) ছাত্র ফয়জান আহমেদ অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা গড়ালো কলকাতা হাকোর্টে (Kolkata High Court). ১৪ অক্টোবর আইআইটি খড়গপু্র ক্যাম্পাসের লালা লাজপত রায় ছাত্রাবাসের রুমে আংশিক পচন ধরা দেহ মিলেছিল ২৪ বছরের ওই তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ার। ঘটনায় খড়গপু্র টাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করে ছেলের মৃত্যুর উপযুক্ত তদন্ত প্রার্থনা করেন ফায়জানের পরিবার। সেই প্রসঙ্গেই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারকে একজন দক্ষ পুলিশ আধিকারিক নিয়োগ করতে বলেছেন।
মৃত ফায়জানের পরিবার ওই রিট আবেদনে আশংকা প্রকাশ করেছেন তাঁর ছেলে র্যাগিং-য়ের বলি হয়ে থাকতে পারে। তাঁদের দাবি মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিংয়ের ছাত্র ফায়জান কিছুদিন আগেও রাজেন্দ্র প্রসাদ ছাত্রাবাসে থাকত কিন্তু হঠাৎই সে লালা লজপত রায় ছাত্রাবাসে চলে যায়। এই যাওয়ার ব্যাপারটা দুই হলের কোনও ওয়ার্ডেন জানতেন না। অর্থাৎ ফায়জান কাউকে না জানিয়ে ছাত্রাবাস পরিবর্তন করে। কারন সে ভয় পেয়েছিল, র্যাগিং-য়ের ভয়।
ফায়জানে পরিবার জানিয়েছে, রাজেন্দ্র প্রসাদ ছাত্রাবাসে থাকার সময় একটি আত্তীকরণ অনুষ্ঠান (Assimilation Programme) হয়। ফায়জান এই অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। সেই কারনেই তাঁকে হেয় করা হচ্ছিল, হেনস্থা করা হচ্ছিল। আর তাই সেখানে থাকতে না পেরে সে লালা লাজপত রায় ছাত্রাবাসে পালিয়ে যায়। এরপরই রিট আবেদনে ফায়জানের পরিবার দাবি করেছেন, আসলে ওই আত্তীকরণ অনুষ্ঠানটি র্যাগিং-য়ের একটি উন্নত সংস্করণ (Glorified Term for collective Ragging) ।
বিচারপতি রাজশেখর মন্থা পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন, এই মামলায় একজন দক্ষ তদন্তকারী আধিকারিক নিযুক্ত করতে হবে। কারন বর্তমান তদন্তকারী আধিকারিক সমর লায়েক সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আবেদনকারী। সেই আধিকারিক ফায়জানের রুমের পাশাপাশি থাকা পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে এবং সেই রিপোর্ট আগামী ১০ই নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন আদালতে সশরীরের এসে জমা দেবেন নতুন তদন্তকারী আধিকারিক। ওই দিনই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, হায়দ্রাবাদের ল্যাবে করা ভিসেরা রিপোর্ট সব আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
এই প্রসঙ্গে ফায়জানের পরিবারের তরফে আইনজীবী অনিরুদ্ধ মিত্র বলেছেন, ফায়জানের মৃত্যু নিয়ে প্রচুর রহস্য আছে। আমরা আশা করছি সেই সব রহস্যের উন্মোচন হবে আদালতের এই রায়ের ফলে। ফায়জানের মা রেহেনা আহমেদ বলেছেন, নতুন তদন্তকারী আধিকারিক নিশ্চয় আমাদের ন্যায্য বিচার পেতে সাহায্য করবেন। আমরা আদালতে আবেদন করেছি আদালতের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত হোক। তাহলে অনেক রহস্য বেরিয়ে আসবে যা আইআইটি খড়গপু্র কর্তৃপক্ষ আড়াল করতে চাইছে।