Saturday, July 27, 2024

Red Crab of Digha : বাঁচালে লাল কাঁকড়া বাঁচবে সৈকত! ২ দিনের প্রচারে মিডনাপুর অটোমোটিভ স্পোর্টস এন্ড অ্যাডভেঞ্চার্স অ্যাসোসিয়েশন

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: সমুদ্র আর মৃত্তিকার মধ্যবর্তী বেলাভূমি বা সৈকতের বাসিন্দা লাল কাঁকড়া বা Red Crab। দেখতে যতটাই সুন্দর প্রকৃতি রক্ষায় ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। লাল কাঁকড়া যতক্ষণ আছে বুঝতে হবে সৈকত নিরাপদ কারন নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই প্রকৃতির এই অদ্ভুদ প্রাণীটি বুঝে যায় ভাঙনের অগ্রিম খবর। তিন দশক আগেও দিঘার (Digha) মূল আকর্ষণ ছিল এই লাল কাঁকড়া এখন অতীত। ঠিক যেমনটাই অতীত দিঘার সৈকতের নিরাপত্তা ক্রমাগত যা ভাঙনের পথে। মানুষ যত বেড়েছে লালকাঁকড়া সরে গেছে দুরে। ফের নিরাপদ জায়গায় গিয়ে জন্ম দিয়েছে নতুন সৈকতের। এমনিভাবেই একদিন অভিমানি লালকাঁকড়ারা সরে এসেছিল মন্দারমনি, তাজপুরে। কিন্তু মানুষের লোভ বড় সাংঘাতিক। গত ১দশক ধরে মন্দারমনি আর তাজপুরকেও পর্যটনের ঠিকানা করে নিয়েছে মানুষ। ফের কী তবে পিছু হটবে লাল কাঁকড়া? এই সব প্রশ্ন নিয়েই মেদিনীপুর শহর থেকে ২দিনের বাইক রাইড শুরু করেছিল মিডনাপুর অটোমোটিভ স্পোর্টস এন্ড অ্যাডভেঞ্চার্স অ্যাসোসিয়েশন (MASA)।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

শনিবার যাত্রা শুরু করে ফিরে এসেছে তাজপুর (Tajpur)সমুদ্র সৈকত পরিভ্রমন দিঘা হয়ে দলটি ফিরেছে রবিবার। তাঁরা সেখানে কী করলেন সেই বিষয়ে MASA সম্পাদক গৌতম কুমার ভকত জানালেন, “উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আমরা দুই দিনের এই ব্যাপী বাইক রাইডের আয়োজন করেছিলাম। বিনোদন নয় উদ্দেশ্য ছিল তাজপুর সমুদ্র সৈকতে সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের সঙ্গে এবিষয়ে মতামত বিনিময় করবেন আমাদের রাইডাররা। শনিবার মেদিনীপুর শহরের গান্ধী মূর্তির পাদদেশ থেকে তাজপুর সমুদ্র সৈকতে পৌছেছিলাম। সেখানে আমরা কথা বলেছি, মত বিনিময় করেছি।স্থানীয় মৎস্যজীবী ও হোটেল কর্তৃপক্ষ এমনকি কিছু পর্যটকদের সাথেও।’

গৌতম আরও বলেন, ‘যে বিষয়টা আমরা বলার জন্য বিশেষভাবে জোর দিয়েছি তা’হল সৈকত সংবন্ধনে লালকাঁকড়ার (Red Crab) গুরুত্ব অপরিসীম। সমুদ্র আমাদের বালি দিচ্ছে অন্যদিকে তীরভূমি দিচ্ছে পলি বা কাদা। এর ঠিক মাঝখানে রয়েছে কোটি কোটি লালকাঁকড়ার দল যারা প্রতিনিয়ত সূর্যের উত্তাপ থেকে বাঁচতে এবং জৈবিক প্রয়োজনে অজস্র ছোট ছোট গর্ত করে চলছে। এই ভাবেই বালি আর পলি মিশে একটি দৃঢ় সৈকত গড়ে উঠছে। আর আমরা কি করছি? সেই সৈকতে গাড়ি ছোটাচ্ছি, তাঁবু খাঁটাচ্ছি, সৈকত খুঁড়ছি। এক কথায় ধ্বংস করছি সেই বেলাভূমি। হাজার হাজার পর্যটকের ভিড়ে লালকাঁকড়া ফের পালাতে শুরু করবে। ওদের ওই মাইগ্রেশন ফের ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাবে সমুদ্রসৈকত ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাই লালকাঁকড়াদের টিকিয়ে রাখাটা জরুরি।’

সংস্থার কোষাধ্যক্ষ অভিজিৎ কুমার দে বলেন, “আমার ওখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাঁদের এটা বলার চেষ্টা করেছি যে সৈকতে গাড়ি চলাচল কিভাবে ওখানে বসবাসকারি জীবদের, বিশেষ করে লাল কাঁকড়ার জীবন বিপন্ন করছে। এভাবে সৈকতের উপর অত্যাচার চলতে থাকলে অচিরেই লাল কাঁকড়ার মতো প্রাণি এখানে আর কোনোদিনই দেখা যাবে না।ফলে এই অঞ্চল অনেক বৈচিত্র্যহীন হয়ে পড়বে। পর্যটকদের মধ্যে অদূর ভবিষ্যতে এ স্থানের প্রতি অনীহা দেখা দেবে। আর তার প্রভাব গিয়ে পড়বে এখানকার আর্থসামাজিক পরিকাঠামোয়।তাই এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় স্থানীয় অধিবাসীগণকেই অগ্রনী ভূমিকা নিতে হবে। আর সরকার যাতে এ বিষয়ে কঠোর আইন প্রণয়ন করেন সে বিষয়েও পদক্ষেপ নিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।”

MASA ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলটির মধ্যে গৌতম ও অভিজিৎ ছাড়াও পরিবেশে স্থানীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর অপরিসীম গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করেন হেদায়েতুর রহমান খান। আকাশ গাঙ্গুলী ও মনোজ গোস্বামীর নেতৃত্বে এবং সৌমেন্দ্র বেরার ব্যবস্থাপনায় এই অভিযানে সুভাশিষ গাঙ্গুলী, কৃষ্ণদাস জানা সহ অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন। আগামী দিনে পাহাড় ও বনাঞ্চল নিয়ে এরকমই কিছু পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন MASA সদস্যরা।

- Advertisement -
Latest news
Related news