Saturday, July 27, 2024

Ghatal: বিরল রায় আদালতের,পালিকা মা-ই আসল মা! মহা চতুর্থীতেই মায়ের ঘরে ফিরল ঘাটালের উমা

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ঠিক যেন গল্পের মতো! এক সন্তানকে ঘিরে দাবিদার দুই মা! এক মা-র দাবী তিনিই জন্মদাত্রী আর অন্য মায়ের দাবী, কোথায় ছিলেন জন্মদাত্রী যখন এক টুকরো মেয়েটিকে তুলে এনে দিনের পর দিন বড় করে তুলেছিলেন? লড়াই শেষ অবধি গড়িয়ে ছিল আদালত অবধি আর সেই লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে টালমাটাল হয়ে গেছিল ছোট্ট মেয়েটার জীবন। দুই মায়ের কাছ থেকেই সরিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল হোমে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে
আনন্দের হাসি

নামে হোম হলেও তো হোম আসলে হোম নয় বরং তাকে হোমলেস বা গৃহহীন হতে হয়েছিল। টানা তিন বছর কেটেছিল মা কে ছাড়াই। কিন্তু সব রাতের শেষে যেমন ভোরের সূর্য ওঠে তেমনই সূর্য উঠল ঘাটালের ” উমা” পিউ দলুইয়ের জীবনেও। আদালত রায় দিয়েছেন পালিকা মা-ই পিউর আসল মা। আর মহা চতুর্থীর সন্ধিক্ষণেই এসেছে সেই ঐতিহাসিক রায় যা ফের পিউকে তার আবাল্যের চেনা ঘর ফিরিয়ে দিল।

ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানার অজবনগরের। অজবনগরের বাসিন্দা দেবু দোলুই ও ছবি দোলই প্রায় ১৫ বছর আগে পেয়েছিলেন পিউকে। তখন থেকেই দেবু আর ছবির ছায়ায় বড় হচ্ছিল পিউ। দিনমজুরের সংসার হলেও ছোট্ট মেয়ের মুখে চির হাসি ফুটিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। স্কুলে ভর্তি করে শেখাচ্ছিলেন পড়াশুনাও। কিন্তু তাল কাটল পিউ এর বয়স যখন ১২ বছর। হঠাৎই হাজির হলেন আরেক মা। তিনিই পিউর জন্মদাত্রী এমন দাবি করে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে এসে হাজির হলেন অজবনগরের ওই বাড়িতে। ইতু সামন্ত নামের খড়ার শহরের ওই মহিলা দাবি করেন দু’বছর বয়সে মেলা থেকে তাঁর যে মেয়ে হারিয়ে গেছিল, এই সেই মেয়ে। সেই মেয়েকে তিনি নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে চান।

খুশির কান্না

কিন্তু ছবি পাল্টা দাবি করেন যে মেয়েকে ছোট্ট থেকে আদর স্নেহ যত্ন দিয়ে নিজের মেয়ে হিসেবেই এত বড় করেছে তাকে ছেড়ে তারা কোনোভাবেই থাকতে পারবেন না, তাই পিউকে তারা দিতে পারবে না। অবশেষে আইনি জটিলতায় পালিতা মায়ের কাছ থেকে পিউকে কেড়ে নিয়ে মেদিনীপুরের সরকারি হোমে পাঠিয়ে দিয়েছিল চাইল্ড লাইন এবং পুলিশ প্রশাসন। তারপর সেই হোমের মধ্যেই বড় হচ্ছিল পিউ। এরই মধ্যে চলছিল সেই আইনি লড়াই। সম্প্রতি সেই মামলার শুনানি শেষে আদালত রায় দিয়েছেন পিউ থাকবেন ছবির কাছেই কারন তার সবটাই তৈরি হয়েছে ছবিকে ঘিরেই।

দুগ্গা দেখতে ভীড়

সেই রায় মেনেই চতুর্থীতে হোম কর্তৃপক্ষ পিউকে পালিকা মায়ের হাতেই তুলে দিল বৃহস্পতিবার। এতদিন কান্নায় চোখের জলে ভিজে যেত পিউর জামার হাতা আর এবার খুশিতেও চোখে জল তার, চোখে জল পিউর মা ছবিরও। মায়ের হাতে হাত রেখে পিউ জানাচ্ছে এবার পুজোয় বাবা মায়ের হাত ধরে মন্ডপে মন্ডপে ঠাকুর দেখতে যাবে সে। পিউ ফিরে আসার পাড়া ভেঙে পড়েছে ছবির বাড়িতে। পূজোর মধ্যে যেন এক দুর্গা এসেছে বাপের বাড়িতে।

- Advertisement -
Latest news
Related news