Saturday, July 27, 2024

Rampurhat Massacar: ৪ বছরে কুঁড়ে ঘর থেকে রাজপ্রাসাদ! আমার স্বামী একা খেতনা, সবাইকে দিয়ে খেত, আক্ষেপ ভাদু শেখের স্ত্রীর

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: ৪ বছরে কুঁড়ে ঘর থেকে ৪তলা প্রাসাদের মালিক হয়েছিলেন রামপুরহাটের নিহত তৃনমূল কংগ্রেসের উপপ্রধান ভাদু শেখ। আগে পুলিশের গাড়ি চালাতেন, ঠিকার ড্রাইভার। এখন অবশ্য তার রাজপ্রাসাদের ছবি মোবাইল ক্যামেরায় ধরা অসম্ভব। হয় পাশ কেটে যাবে নয় ওপর নিচ। কী করে এত টাকার মালিক হলেন ভাদু শেখ যে এতবড় প্রাসাদোপম বাড়ি বানান? এলাকার মানুষরা বলছেন, নামে বেনামে একাধিক বালির খাদানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন ভাদু। নিজের একাধিক বালি খাদান তো ছিলই তা ছাড়াও ওই এলাকার প্রতিটি বালি খাদান থেকেই নিয়মিত টাকা আসত তাঁর কাছে। লুটের এই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ নিহত ভাদু শেখের স্ত্রী কোবিলা বিবিও। স্বামীর মৃত্যুর খবর আসার পর কোবিলা কান্নায় ভেঙে পড়ে জানিয়েছেন, ‘আমার স্বামী একাই সব খেতনা। সবাইকেই দিত তারপরও ওরা আমার স্বামীকে ছাড়লনা!’

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

যদিও এই প্রথম নয়, বালি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাদু শেখের দখলদারির বিরুদ্ধে ভাদু শেখ আর তাঁর দাদার বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠছিল তৃনমূলেরই একটি গোষ্ঠী। পুলিশের ড্রাইভার ভাদু শেখ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোথাও কোনও বিরোধীদলকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি। যাঁরাই তৃনমূলের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তাঁদেরকেই হুমকি দিয়েছেন অথবা দলবল নিয়ে ঠেঙিয়েছেন। সেই সময় একটি ঠেঙাড়ে বাহিনী তৈরি করেন তিনি। যেহেতু পুলিশের ড্রাইভার তাই পুলিশেরও সহযোগিতা মিলে যায়। ফলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে সেই বাহিনী। ব্যাপক মারধর করা হয় বিরোধীদের। নিরঙ্কুশ হয়ে যায় ভাদুর জেতা। ভাদু নিজে পঞ্চায়েত সামলাতে থাকেন আর তোলার দায়িত্ব দেন দাদা বাবর শেখকে।

এদিকে যে দলটিকে নিয়ে ভাদু এলাকাকে বিরোধী শূন্য করেছিলেন সেই দলটিতে ছিল তৃনমূল নেতা ছোট লালন, সোনা শেখ, পলাশ শেখরা। ভাদু উপপ্রধান হবার পরই চেহারা বদলে যায় ভাদু আর তার দাদা বাবরের। উপেক্ষা করতে থাকে লালন, সোনা, পলাশদের। ফলে বগটুই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার ভাদুর ডানহাত লালন শেখরাই ভাদু শেখের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হয়ে ওঠে। সম্ভবত: এক সময়কার এই ভাদুর অনুগামীদের হাতেই ভাদুর দাদা বাবর শেখ খুন হন। আর তারপর থেকেই শুরু হয় বালির দখলদারি নিয়ে তৃনমূলের দুটি গোষ্ঠীর লড়াই।ভাদু শেখের স্ত্রী কোবিলা বিবির অভিযোগ, ঘটনার দু’দিন আগেও ভাদুকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু কেন এই বিবাদ? আর এখানেই উঠে আসছে, এলাকা নিয়ন্ত্রণের তত্ত্ব।

ভাদুর স্ত্রী কোবিলা যতই বলুননা কেন তাঁর স্বামী সবাইকে দিয়ে খেতেন কিন্তু ঘটনা হচ্ছে সেই দেওয়াতে সন্তুষ্ট ছিলনা তৃনমূল কংগ্রেসের অন্য গোষ্ঠী। কারন সিংহভাগই নিয়ে নিতেন ভাদু। যে কারনে চারবছরে কুঁড়ে ঘর থেকে রাজপ্রাসাদ বানিয়েছিলেন ভাদু। যা তাঁকে বিবাদের মধ্যে ঠেলে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। আড়াআড়ি বিভাজন হয়ে যায় বগটুই পূর্বপাড়ার ভাদু আর পশ্চিম পাড়ার লালন শেখদের মধ্যে। এরপরই সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সেই বিরোধীরাই জাতীয় সড়কের পাশে বগটুই মোড়ে আততায়ীরা বোমা ছুঁড়ে খুন করে ভাদু শেখকে। মাত্র চারবছরে চারতলা প্রাসাদ বানালেও তা ভোগ করতে দিলনা তাঁরই তৈরি করা দুস্কৃতিরা।

- Advertisement -
Latest news
Related news