নিজস্ব সংবাদদাতা: আগামী সোমবার থেকেই রাজ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক থেকে সমস্ত স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পঠন পাঠন চালু করার কথা ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। করোনাকালে দেশের সর্বাধিক সংক্রমন ঘটেছিল ওই রাজ্যে। সেই রাজ্যই যদি এই ঘোষণার স্পর্ধা দেখাতে পারে তবে নীরব কেন বাংলা? এমনই প্রশ্ন তুলে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দ্বিতীয়বার রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হল রাজ্যের বিদ্যালয় প্রধানদের সর্ব বৃহৎ সংগঠন এডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স এন্ড হেডমিস্ট্রেসেস বা
এ এস এফ এইচ এম।
মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের শিক্ষা কর্তাদের কাছে ডেপুটেশনের পর বৃহস্পতিবার কারিগরী ভবনের চেয়ারম্যানকেও স্মারকলিপি জমা দিয়ে
অবিলম্বে বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পঠন পাঠন শুরুর দাবীতে ডেপুটেশন দিয়েছেন ‘এ এস এফ এইচ এম’ নেতৃত্ব। সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শ্রী চন্দন কুমার মাইতি এই ডেপুটেশন প্রসঙ্গে জানিয়েছেন,
‘ প্রায় দুই বছর শিক্ষাঙ্গন বন্ধ। লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষার মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেইসাথে বাল্য বিবাহ, নারী নির্যাতন সহ স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা। এমতাবস্থায় শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের বাঁচানো তথা শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার বিকল্প কোনও পথ নেই।’
শ্রী মাইতি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ মহারাষ্ট্রের মত সর্বাধিক আক্রান্ত রাজ্য যদি এই উদ্যোগ নিতে পারে তবে আমাদের সরকারের এত দ্বিধা কেন?’ পাশাপাশি তিনি সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘ একদিকে স্কুলের সরাসরি পঠনপাঠন বন্ধ আর অন্যদিকে উৎসশ্রী মারফৎ গ্রাম থেকে নির্বিচারে শহরে শিক্ষক চালান করা হচ্ছে। গ্রামের বিদ্যালয়গুলি ফাঁকা করে দিয়ে শহরের স্কুলে একই বিষয়ে একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা ভরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এরই বিষময় প্রভাব পড়তে চলেছে রাজ্যের গ্রামীন শিক্ষা ব্যবস্থায়। অন্যদিকে প্রশাসনিক বদলির নাম করে শাস্তিমূলক বদলি করে শিক্ষকদের ওপর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে কোনও গূঢ় অভিসন্ধি নিয়ে। সরকার যদি এটা করতেই থাকেন তবে এর মাশুল দিতে হবে সাধারণ শিক্ষা বিশেষ করে গ্রামীন বিদ্যালয়গুলিকে।’
ইতিমধ্যেই সমস্তস্তরে সরাসরি পঠনপাঠন ও পড়ুয়াদের জন্য বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি বা এবিটিএ। এবার সেই দাবিতে সোচ্চার হল রাজ্যের শিক্ষকদের আরও একটি সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। আগামী ২৫শে জানুয়ারি কলকাতায় জমায়েতের আহবান জানিয়েছেন তাঁরা। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, ‘শুধু শিক্ষক বা পড়ুয়ারা নয়, সঙ্কটে সমস্ত সমাজ। অবিলম্বে স্বাভাবিক পঠনপাঠন শুরু না হলে খুবই ক্ষতি হয়ে যাবে। আমরা সেই দাবি নিয়ে রাস্তায় নামছি। সব্বাইকে আহ্বান জানাই।’
রাস্তায় নেমেছেন ছাত্র-যুবদের বিভিন্ন সংগঠনও। খেলা মেলা উৎসব আচার সব কিছুই চললে স্কুল কলেজ বন্ধ কেন এই দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা। ইঙ্গিত মিলেছে ইতিমধ্যে সরকারের তরফে তেমন কোনও ঘোষণা না হলে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ জেলা এবং কলকাতায় আন্দোলনের চাপ বাড়তে চলেছে স্বাভাবিক পঠনপাঠন ও পড়ুয়াদের জন্য স্কুল কলেজ খোলার দাবিতে। শ্লোগানও তৈরি, ‘সবাই মিলে আওয়াজ তোলো, ফেব্রুয়ারিতেই স্কুল খোলো।’