নিজস্ব সংবাদদাতা: বাড়িতে বাড়িতে আটটা দশটা করে বাইক! গ্ল্যামার, প্লাটিনা, সাইন, পালসার কী নেই! ৯৬ হাজারের বাইক মিলছে ২৬ হাজার টাকায়, আশি হাজারের বাইক ঠিকমত রফা করতে পারলে ১৮হাজার টাকায় মিলে যেতে পারত। খড়গপুর শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটারের মধ্যে এমনই একটি গ্রামের সন্ধান পেল পুলিশ। যে গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে চুরির বাইক লুকানো থাকত।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/07/IMG-20220730-WA0030.jpg)
প্রাথমিকভাবে জানতে পারা গেছে খড়গপুর, মেদিনীপুর শহর ছাড়াও আশেপাশের ডেবরা, পিংলা, সবং, নারায়নগড়, কেশিয়াড়ী, বেলদা, দাঁতন ইত্যাদি থানা এলাকা থেকে চুরি করা বাইক জমা হত খড়গপুর শহরতলির এই গ্রামে। খড়গপুর শহর লাগোয়া বালেশ্বর-রানীগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ঘেঁষা ওই গ্রামের নাম পপরআড়া। খড়গপুর লোকাল থানার পুলিশ ওই গ্রামে হানা দিয়ে কয়েকটি বাড়ি থেকে ২৬টি বাইক উদ্ধার করেছে। সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাইক চুরি চক্রের ২পান্ডাকেও। এই ঘটনায় জড়িত মূল পান্ডা ও বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার বিভিন্ন এলাকায় নাকা চেকিং চলছে। গত বৃহস্পতিবার নাকা চেকিং চলাকালীন সেখ মোতি নামের একজন বাইক আরোহীকে ধরে তার গাড়ির কাগজপত্র চায় খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার পুলিশ। কিন্তু বাইক আরোহী কোনোরকম সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তারপরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে বাইকটি চুরির বাইক এবং বাইকটি সে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদকে দিতে যাচ্ছে। পুলিশ জানতে পেরে গোপালপুরে আব্দুল মজিদ এর বাড়িতে হানা দেয় এবং আব্দুল মজিদকেও গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। ধৃত দুজনকে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর আদালতে তোলা হলে আদালত ধৃত দুজনকে নয় দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশের বারংবার জিজ্ঞাসাবাদের পরে শুক্রবার রাতে ধৃত দুজনের বাড়ি ও আশেপাশের আরো কয়েকজনের বাড়িতে লুকিয়ে রাখা মোট ২৬ টি মোটর বাইক উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে খবর ধৃত সেখ মোতির পপরআড়া বাড়ি থেকে ১০ টি ও ধৃত আব্দুল মজিদের বাড়ি থেকে ৮ টি ও আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি থেকে ৮ টি মোটর বাইক উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরো খবর যে এই বাইক গুলি জেলার বিভিন্ন থানা চত্বর থেকে চুরি করে এদের বাড়িতে এনে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর একটি স্থানীয় দল এই বাইক চুরির ঘটনায় জড়িত। দলের মূল পান্ডা ও বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার পুলিশ। তবে উদ্ধার হওয়া ২৬টি বাইকের মধ্যে তিনটি বাইকের নাম্বার প্লেট থাকলেও বাকি বাইক গুলিতে কোনো নাম্বার প্লেট নেই। ফলে বাইক গুলির ইঞ্জিন ও চেসিস নাম্বার দিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় পাঠানো হয়েছে উদ্ধার হওয়া বাইকগুলির আসল মালিকদের খোঁজ পাওয়ার জন্য।