নিজস্ব সংবাদদাতা: একেবারেই নয়া কায়দা! ঠিক যেন সিনেমার মত। দোকানে এল এক খরিদ্দার। আশেপাশের দোকান ও লাগোয়া এলাকায় দাঁড়িয়ে আরও দু’একজন। যেন তারাও কিছু কিনতে চায়। ক্রেতাদের কেউ কেউ বাইক রাখে এ দোকান ও দোকানের সামনে। জিনিসপত্র কেনাকাটা চলে। ব্যস্ত রাজ্য সড়কের পাশেই সার দিয়ে দোকান। দোকানদাররা যে যার নিজের ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত। অথবা ব্যস্ত রাখা হয় তাঁদের। একজন ক্রেতা দোকানদারের কাছ থেকে একটি জিনিস কিনে দোকানির হাতে টাকা দিয়ে নেমে যায় বাইকের দিকে। দোকানি খেয়াল করে অনকেটা টাকা কম দিয়ে চলে যাচ্ছে। দোকানির মাথায় হাত! সে দোকান ছেড়ে দৌড়ায় ক্রেতাকে ধরতে। অমনি আরেক ক্রেতা হাত বাড়িয়ে ড্রয়ার থেকে টাকা তুলে চম্পট দেয়।
শনিবার ঠিক এমনই কায়দায় ফেরেপবাজি করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা থানা এলাকার ক্ষীরপাই পৌরসভার অন্তর্গত হালদারদীঘির একটি দোকান থেকে দিনে দুপুরে ২২হাজার টাকা নিয়ে পালালো বাটপারের দল। চন্দ্রকোনা-ঘাটাল রাজ্য সড়কের ওপর জনবহুল এলাকার ওই দোকানটির নাম আর কে পাওয়ার টুলস। মূলতঃ বিদ্যুৎ নির্ভর সরঞ্জাম সরানোর যন্ত্রপাতি বিক্রি হয় এখানে। দোকানটি চালান শুভ্রা বক্সী। সেই দোকানেই একটি জিনিস কিনতে আসেন এক ব্যাক্তি। এরপর দাম ধরিয়ে নেমে যান ওই ব্যক্তি। শুভ্রা ড্রয়ারে টাকা রাখার আগে টাকা গুনতে গিয়ে দেখেন টাকা কম। শুভ্রা চিৎকার করে ডাকতে থাকেন ওই ক্রেতাকে। কিন্তু ক্রেতা শুনতে পাননি এমন। ভাব করে চলে যেতে থাকেন। রাস্তায় নেমে যান। উপায়ন্তর না দেখে শুভ্রা দোকান ছেড়ে বেরিয়ে ক্রেতার পেছন পেছন ছুটে যান। ড্রয়ারে চাবি লাগানো হয়না।
ওদিকে ক্রেতা কখন দুরে রাখা বাইক নিয়ে চম্পট দিয়েছে। নিজের ভাগ্যকে দোষ দিতে দিতে শুভ্রা দোকানে ফিরে আসেন। এবার আরও অবাক হওয়ার পালা! দেখেন ড্রয়ার হাট করে খোলা। গায়েব কিছুক্ষণ আগেই বান্ডিল করে রাখা ২২ হাজার টাকা! শুভ্রা এদিক ওদিক তাকাতে থাকেন। কেউ কোথাও নেই। খবর পেয়ে ছুটে আসেন অন্য দোকানদাররা। দোকান কম্পাউন্ডে অন্য একটি দোকানের লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ঘেঁটে দেখতেই ধরা পড়ে পুরো কায়দাটাই। দেখা যায় ক্রেতা সেজে আরও কয়েক বাটপার দাঁড়িয়েছিল এদিক ওদিক। কেউ নজর রাখছে রাস্তার দিকে, কেউ বা অন্য দোকানে ঢুকে আছে। বোরখা পরা এক মহিলাকেও হেঁটে যেতে দেখা গেছে। লাল গেঞ্জি পরা ছাতা দিয়ে নিজের মুখ আড়াল করতেও দেখা গেছে একজনকে। কিন্তু দোকানের নিজস্ব সিসিটিভি না থাকায় ধরা পড়েনি চুরির পরিষ্কার দৃশ্য। ক্ষীরপাই পুলিশ ফাঁড়িতে সিসিটিভি ফুটেজ সহ অভিযোগ জানিয়েছেন দোকান মালিক শুভ্রা বক্সী। গেয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। ঘটনায় এলাকার ব্যবসাদাররা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।