নিজস্ব সংবাদদাতা : আদালতে পেশ করার পর দু’দিনের জন্য আনা হয়েছিল আসামীকে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তাকে ফের পেশ করার কথা ছিল আদালতে কিন্তু তার আগেই পগারপার আসামী। এদিকে মঙ্গলবার আদালতে পেশ না করতে পারলে বিচারকের রোষে পড়তে পারে পুলিশ তাই এলাকা জুড়ে চলছে নিবিড় পুলিশি তল্লাশি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন শীর্ষ আধিকারিকরা। পরবর্তী কর্তব্য নির্ধারনে পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা যদিও ১২ ঘন্টা পেরিয়েও খোঁজ পাওয়া যায়নি ওই আসামীর। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে পলাতক হেফাজতে থাকা এক আসামি। আসামীর নাম সোমনাথ ঘোড়ই ওরফে গেরু। বাড়ি কেশিয়াড়ি সংলগ্ন এলাসাই এলাকায়। কয়েকদিন আগেই বেলদায় এক ব্যবসায়ীর গুদামে চুরির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ঘটনার তদন্তে নেমে বেলদা পুলিশ জানতে পারে চুরিতে কয়েকজনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কেশিয়াড়ীর এলাসাইয়ের বাসিন্দা ২১ বছরের সোমনাথ। পুলিশ জানিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই শনাক্ত করা হয় সোমনাথকে। এরপর খোঁজ চালিয়ে শনিবার রাতে তাকে কেশিয়াড়ী বাজার এলাকা থেকে। রবিবার তাকে দাঁতন এসিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ আরও কিছু তথ্য পাওয়ার জন্য আসামীকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে। বিচারকের ধৃতের দুদিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার ধৃতকে ফের আদালতে পেশ করার কথা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই গুদাম চুরিতে সোমনাথের সঙ্গে আর কারা জড়িত ছিল জানার পাশাপাশি বেলদা এলাকায় ঘটে যাওয়া পূর্বের কিছু অপরাধের তত্ত্বতলাশ করতেই আসামীকে হেফাজতে নেওয়া জরুরি ছিল। রবিবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সোমবারও কিছু জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সোমবার সকালে অদ্ভুত আচরণ শুরু করে আসামী। সে থানার লকআপের গারদে ক্রমাগত মাথা ঠুকতে থাকে। একপ্রকার বাধ্য হয়ে কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক তাকে লকআপ থেকে বের করে বাইরে বসায়। কর্তব্যরত আধিকারিক যখন অন্যান্য মামলার তদবির করছিলেন তখন আসামী সুযোগ বুঝে থানা থেকে বেরিয়ে পালায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মারাত্মক মাদকাসক্ত ওই যুবক কয়েকঘন্টা ড্রাগস বা মাদক না পাওয়ার জন্য তার উইথড্রল সিনড্রোম দেখা গিয়েছিল নাকি ইচ্ছা করেই পালানোর পরিকল্পনা থেকে পাগলের মত মাথা ঠুকছিল তা বোঝা আপাততঃ মুশকিল। এই মুহূর্তে পুলিশ আশেপাশের সমস্ত সম্ভাব্য এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে। তথ্যটি জানানো হয়েছে পার্শ্ববর্তী থানাগুলিকেও। পুলিশের নিজস্ব ইনফর্মার, সিভিক ইত্যাদিদের সতর্ক করা হয়েছে। যে কোনও ভাবেই মঙ্গলবার আদালতের কাজ শেষ হওয়ার আগেই যাতে সোমনাথকে বিচারকের কাছে পেশ করা যায় সেই ব্যাপারে এখন মরিয়া পুলিশ।