নিজস্ব সংবাদদাতা: চন্দ্রকোনা থেকে মাত্র আধঘন্টা সময় পেলেই মোবাইল চলে যাচ্ছে কেশপুর তারপর তা হাতবদল হয়ে খড়গপুর শহর। ঘাটাল মহকুমা জুড়ে টাকা , মোবাইল ইত্যাদি চুরি করার একটি বড় নেটওয়ার্ক কাজ করছে এবং এই চোরের দলটি কেশপুর হয়ে খড়গপুর অবধি জাল বিছিয়েছে। কিছুদিন আগেই দাসপুরের গোপীগঞ্জ বাজারে এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের টাকা ছিনতাইয়ে খড়গপুর থেকে দুষ্কৃতিদের গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি চন্দ্রকোনায় উদ্ধার ৫৫টি চুরির মোটরসাইকেল উদ্ধারের ঘটনায় কেশপুর যোগ পেয়েছে পুলিশ। এবার মোবাইল চুরিতেও খড়গপুর ও কেশপুর যোগ।
শুক্রবার ভরা বাজারেই পরপর তিনটি মোবাইল হাত সাফাই! তিন নম্বর চুরি করতে গিয়ে অবশ্য শেষরক্ষা হলনা। ধরা পড়ে গেল জনতার হাতে। আর হাতের কাছে চোরকে পেয়ে খুঁটিতে বেঁধে চলল গনপ্রহার। খবর পেয়ে চোরকে উদ্ধার করে পুলিশ। উত্তেজিত জনতাকে দেখা গেল পুলিশের সামনেই আরও কয়েক ঘা পেটাতে। দিনের পর দিন মোবাইল চুরিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। শুক্রবার এমনই ঘটনা দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত রেগুলেটেড বাজারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে এদিন চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড ভরা বাজার থেকে পরপর দুজনের মোবাইল চুরি যায়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ায় ফুঁসছিল বাজারের ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই। এই সময় উজ্জ্বল বটব্যাল নামে এক ব্যক্তির হঠাৎই খেয়াল করেন তাঁর পকেটে থাকা আ্যনড্রয়েড ফোনটি নেই। সাথে সাথে তিনি আশেপাশে নজরদারি চালান এবং এক কিশোরকে তার পাশ থেকে চট করে সরে যেতে দেখেন। সন্দেহ হলে তাকে ঘিরে ধরে তল্লাশি করতেই ওই যুবকের পকেট থেকে উদ্ধার হয় উজ্জ্বলের মোবাইলটি। এরপর বাজারে থাকা জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই তরুণকে একটি খুঁটিতে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ওই তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারা যায় কিছুক্ষন আগেই সে সবজি বাজারে বাজার করতে থাকা সঞ্জয় গাঙ্গুলি নামে আরেক যুবকের মোবাইল চুরি করেছিল। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে তা হাত সাফাই হয়ে চলে যায় ওই দলেরই আরেক পান্ডার কাছে। তারপর তা চলে যায় কেশপুরে। ধৃত তরুন জানায় সঞ্জয়ের মোবাইল ফোনটি বর্তমানে কেশপুরে থাকলেও তার আগে চুরি হওয়া মোবাইলটি অবশ্য আর কেশপুরে নেই ফলে সেটি আর পাওয়া যাবেনা। তবে কেশপুরে থাকা চুরি যাওয়া দ্বিতীয় মোবাইলটি কেশপুর থেকে ফেরত আনা যাবে। চন্দ্রকোনা শহরের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মোবাইল চুরির দাপটে অতিষ্ঠ তাঁরা। সন্ধ্যাবেলায় চন্দ্রকোনা-মেদিনীপুর রাজ্য সড়কের পাশে এলাকার তরুণরা কথা বলতে বলতে হাঁটলে কিংবা টিউশিনি পড়ে ফেরার পথে ছাত্রীদের হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিমেষে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে চোরের দল।
পুলিশ ধৃত তরুনের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে খড়গপুরের বানজারা গোষ্ঠীর তরুণ। এরা বেশ কয়েকটি দলে ঘোরা ফেরা করে। একজন কোনও জিনিস চুরি করার পরই চুরির দ্রব্য অন্যের কাছে পাচার করে দেয়। চুরির দ্রব্য নিয়ে নিমেষে এলাকা ছাড়ে পরের ব্যক্তি। চোর ফের দ্বিতীয় চুরি টার্গেট করে। সেই চুরি সম্পন্ন হলে অন্য একজন হাজির হয় তার কাছে। সেও আগের মত চুরির দ্রব্য নিয়ে এলাকা ছাড়ে। শুক্রবার এভাবেই পরপর দুটি মোবাইল চন্দ্রকোনা থেকে কেশপুরে চলে যায়। তৃতীয় চুরি ধরা পড়ায় এই মোবাইলটি পাওয়া যায়। তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো দলটির হদিস পেতে চাইছে পুলিশ।