নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার দুপুরের পর থেকে শুরু হওয়া তুমুল বৃষ্টিতে খড়গপুর ও মেদিনীপুরের একাংশ। রবিবার সকাল থেকে প্রায় একটানা বৃষ্টিতে খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহরের জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত। রাত পোহালেই ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য সারাদেশের সাথে দুই শহরেই বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে বিভিন্ন সংগঠন কিন্তু মাথায় হাত তাদের। বহু জায়গাতেই সাজানো গোছানো মন্ডপ তছনছ হয়ে গেছে ভারী বৃষ্টিতে। জল থৈথৈ মন্ডপ প্রাঙ্গণ। ফলে মধ্যরাতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনেক জায়গাতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিপর্যস্ত। উদ্যোক্তারা তারই মধ্যে প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অনুষ্ঠানকে যথেষ্ট গুরুত্ব ও সম্মানের সঙ্গে পালন করার জন্য।
ওদিকে টানা বৃষ্টির ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর ও মেদিনীপুর মহকুমা ছাড়াও ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা থানা এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় জল জমেছে। যদিও ঘাটাল ও দাসপুর এলাকায় তেমন প্রভাব পড়েনি এখনও অবধি। পশ্চিম মেদিনীপুরের কাঁসাই ও কেলেঘাই নদীতে সামান্য জল বেড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে যা সোমবার আরও বাড়ার আশঙ্কা। তবে উঁচু জায়গায় এই বৃষ্টির প্রভাবে কৃষকদের মনে কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে। চলতি মরসুমে ভালো বৃষ্টি না হওয়ায় চাষের প্রয়োজনীয় জলের যে সঙ্কট দেখা দিয়েছিল তার অনেকটাই পূরণ হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। সেইদিক দিয়ে বিচার করলে এই টানা বর্ষণ তাঁদের কাছে আশীর্বাদ।
যদিও বিপদ দেখা দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়ার নদী সংলগ্ন নিচু এলাকাগুলিতে। পূর্ণিমার কোটাল ও নিম্নচাপের টানা ভারী বর্ষণে ফুঁসে উঠেছে হলদি, হুগলি, রসুলপুর, রূপনারায়ণ প্রভৃতি ছোটবড় বিভিন্ন নদী। টানা বৃষ্টির কারণে শনিবার রাত থেকেই জলে ভাসতে শুরু করে নদী তীরবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল, সুতাহাটা, দেশপ্রাণ, নন্দীগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। রবিবার সকালে জোয়ারের সময় কোথাও কোথাও বাঁধ উপচে জল ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। কোথাও মাঠ, রাস্তা পুকুর একাকার হয়ে গেছে । জলের তলায় তলিয়ে গেছে ধানের চারা। রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জলের স্রোত।
এই পরিস্থিতিতে জলবন্দি হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কয়েকশো পরিবারের মানুষ। বিপর্যস্ত স্বভাবিক জনজীবন। এখনও অবধি জানা গেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দেশপ্রাণ, সুতাহাটা, মহিষাদল ও নন্দীগ্রাম ব্লকের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে জোয়ারের সময় যেসব এলাকায় নদীর জল ঢুকেছিল ভাটার সময় সেই জল নেমে গেছে। ফলে কাউকে ত্রাণ শিবির সরিয়ে আনতে হয়নি। বাঁধ টপকে জল ঢুকলেও কোথায় বাঁধের ক্ষয়ক্ষয়তি সেভাবে হয়নি বলে জানানো হয়েছে সেচ দপ্তরের তরফে। পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছেন বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়াররা। স্থানীয় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। বৃষ্টি যদি একটানা আরও দু’একদিন চলে তবে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।