বিভূ কানুনগো: খড়গপুর শহরকে ছুঁয়ে যাওয়া কিংবা শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ব্যস্ততম জাতীয় ও রাজ্য সড়কের পাশে থাকা পথ কুকুরদের গলায় রেডিয়াম বেল্ট লাগানো শুরু করল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উই-উইয়ানস্ (We_WEians)। এর ফলে গাড়ির চালক নিজেকে পথ কুকুরদের হঠাৎ রাস্তায় উঠে আসা জনিত দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারবে এবং এরই পাশাপাশি কুকুরদেরও জীবন রক্ষার সুযোগ বাড়বে বলে মনে করছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। বুধবার থেকে এই কাজটি শুরু হয়েছে পরীক্ষা মূলক ভাবে। পরীক্ষা মূলক এই কারনেই বলা হচ্ছে যে, অনভ্যস্ত পথ কুকুরদের গলায় বেল্ট বাঁধার ফলে কোনও বিপরীত প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা সেটাও দেখার বলে জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অন্যতম সদস্য সৌরভ ঘোষ।
সৌরভ জানিয়েছেন, “খড়গপুর শহরকে ছুঁয়ে অথবা শহরের মধ্যে দিয়ে দু’দুটি জাতীয় সড়ক এবং একটি ব্যস্ততম রাজ্য সড়ক রয়েছে। দুটি জাতীয় সড়ক হল হাওড়া-মুম্বাই (Howrah-Mumbai National Highway) এবং বালেশ্বর-রানীগঞ্জ (Baleswar-Raniganj National Highway)। অন্যদিকে ব্যস্ততম রাজ্য সড়কটি হচ্ছে আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur) ঘেঁষে যাওয়া খড়গপুর-কেশিয়াড়ী রাজ্য সড়ক (Kharagpur -Keshiary) । এই সড়কগুলির লোকালয়ের অংশে যে পথ কুকুররা থাকে। তাদের জন্য যেমন গাড়ি চালকরা দুর্ঘটনায় পড়েন তেমনই গাড়ির জন্য পথকুকুরদেরও জীবনহানি ঘটে। তাই আমরা ঠিক করেছি চৌরঙ্গী থেকে ইন্দা (Chowrangi to Inda), সাহাচক থেকে নিমপুরা মোড় (Sahachak to Nimpura), বারোবেটিয়া থেকে কৌশল্যা (Barabetia to Koushalya) , ডিভিসি (DVC), প্রেমবাজার (Prembazar), আইআইটি ফ্লাইওভার থেকে ছোট ট্যাংরার (IIT Flyover to Chhoto Tangra) অংশের পথ কুকুরদের গলায় এই রেডিয়াম বেল্ট লাগাবো। এতে গাড়ির চালক অনেক দুর থেকেই রাস্তার ওপর কিংবা পাশে থাকা কুকুরদের অস্ত্বিত্ব বুঝতে পারবে।”
সৌরভ ছাড়াও উই-উইয়ানস্ টিমের, সুস্মিতা চক্রবর্তী, অনুরোধ মজুমদার, জিতেন সাহু, শুভম মহানন্দা, কৌশানি রায়, অদিতি চক্রবর্তী প্রমূখরা মূলতঃ কাজ করে থাকেন দুঃস্থ শৈশবের পড়াশুনা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য নিয়ে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু এঁদের। এঁদের কেউ শিক্ষক, কেউ সরকারি অথবা বেসরকারি সংস্থায় পেশায় নিযুক্ত। কেউ আবার বেকার, কেউ নিপাট গৃহবধূ। শিশুদের নিয়েই মূলতঃ এঁদের কাজ। কিন্তু পরিস্থিতির ডাকে সাড়া দিয়ে কখনও কখনও অন্য বিষয় নিয়েও কাজ করতে হয়। যেমন লকডাউনে প্রায় ৬২ টি দিন পরিবেশন করেছেন রান্না করা খাবার।
এবার এই নতুন ভাবনার কারন হচ্ছে কুকুর জনিত দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা। পথচারী ও কুকুর দুজনকেই নিরাপত্তা দেওয়া। সৌরভ বলেন, বাড়ির কুকুরেরা গলায় বেল্টে অভ্যস্থ হলেও রাস্তার কুকুররা তা’নয়। এদের বেল্টে অভ্যাস না থাকায় অস্বস্তি বোধ করে। ছিঁড়ে ফেলতে চায়। আবার অন্য কুকুর বেল্ট বাঁধা কুকুর দেখলে চিৎকার করে। এই সবই আগে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করতে হয়। তাই আপাততঃ চৌরঙ্গী থেকে ইন্দা ৫০টি কুকুরকে বেল্ট বাঁধার কাজ শুরু হয়েছে। যদি সত্তর শতাংশ কুকরের বেল্ট টিকে যায় তবে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।