নিজস্ব সংবাদদাতা: মর্মান্তিক দুর্ঘটনার স্বাক্ষী থাকল খড়গপুর শহর ছুঁয়ে যাওয়া ৬ নম্বর হাওড়া-মুম্বাই ( Howrah-Mumbai NH) জাতীয় সড়ক। হঠাৎই বিকল হয়ে যাওয়া একটি লরির টায়ার বদলানোর সময় অন্য একটি লরি পিষে দিল বিকল হয়ে যাওয়া লরির চালক ও খালাসিকে। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর গ্রামীন থানার পেলাগেড়িয়া সংলগ্ন জাতীয় সড়কের অংশে। সূত্র মারফৎ জানা গেছে নিহত দুই ব্যক্তির নাম সুমিত কুমার বেরা (২৬) এবং মহম্মদ সাবির (৩৬)। এঁদের দুজনেরই বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়াতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সুমিতের বাড়ি ভাবনীপুর থানার দেভোগ এবং সাবিরের বাড়ি দুর্গাচকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বিকল হয়ে যাওয়া লরিটি কিছু দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে হলদিয়া থেকে রওনা হয়েছিল খড়গপুর অভিমুখে। রাতের দিকে ডেবরা ছাড়িয়ে বসন্তপুর পের হয়ে পেলাগেড়িয়ার কাছাকাছি হঠাৎই পেছনের টায়ার ফেটে যায় লরিটির। এরপর লরিটিকে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে সুমিত এবং সাবির মিলে গাড়িটির টায়ার পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু গাড়িটির ব্যাক লাইট, পার্কিং লাইট জ্বালানো ছিলনা। ওই সময় পেছন দিক থেকে আসা একটি লরি সরাসরি ধাক্কা মারে দাঁড়িয়ে থাকা লরিটিকে আর তাতেই পিষে যায় লরির চালক এবং খালাসি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী রাতের বেলায় রাস্তার ওপর গাড়ি দাঁড় করালে পার্কিং লাইট, নিদেন পক্ষে ব্যাক লাইট জ্বালাতে হয়। পার্কিং লাইট গাড়ির পেছনে এবং গাড়ির বডির দু’পাশে থাকে যাতে করে গাড়ির অবস্থান এবং আয়তন বোঝা যায়। এমনিতেই রাতে কুয়াশা ছিল তার ওপর গাড়ির পার্কিং লাইট না জ্বলাতেই সম্ভবতঃ পেছন থেকে আসা লরিটি বুঝতে না পেরে সরাসরি ধাক্কা মারে দাঁড়িয়ে থাকা লরিটিকে। গাড়ির পেছনের অংশে কর্মরত সুমিত ও সাবির থেঁতলে যায়।
ঘটনার কিছু পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় খড়গপুর গ্রামীণ পুলিশের টহলরত গাড়িটি। তাঁদের কাছ থেকে খবর পেয়ে চলে আসে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষর আ্যম্বুলেন্স। দুজনকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন দু’জনকেই। ওঁদের কাছে থাকা কাগজপত্র দেখে রাতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশকে ঘটনাটি জানায় পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ। খবর যায় ভবানীপুর ও দুর্গাচক থানা এবং নিহত পরিবারে। রাতেই রওনা দেয় পরিবার এবং আত্মীয় স্বজনেরা। বুধবার ময়নাতদন্তের পর দু’জনের দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। ছবি: প্রতীকি, খড়গপুরের ঘটনার নয়