শশাঙ্ক প্রধান: খড়গপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রোগী নিয়ে যাওয়া একটি অ্যাম্বুলেন্স ভয়াবহ দুর্ঘটনার মধ্যে পড়ল। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১১৬নম্বর হাওড়া-মুম্বাই জাতীয় সড়কে ওই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে খড়গপুর পৌরসভার অ্যাম্বুলেন্স চালক সহ রোগী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা আহত হয়েছেন। ঘটনায় রোগীর আঘাত খুব গুরুতর না হলেও রোগীর পরিবারে দুই সদস্যের অবস্থা খুবই গুরুতর জানা গেছে। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদনীপুরের ডেবরা থানার অন্তর্গত ডেবরা বাজারের ওপর থাকা ফ্লাইওভার পেরিয়ে পথের সাথী হোটেলের কাছাকাছি।
সূত্র মারফৎ জানা গেছে ওই অ্যাম্বুলেন্সটি এক রোগী এবং রোগীর বাড়ির ৩ সদস্যকে বহন করে খড়গপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। ডেবরার কাছাকাছি ৬ লেন বিশিষ্ট ওই জাতীয় সড়কের দক্ষিণ দিকের লেনে হঠাৎই একটি বাছুর চলে আসে অ্যাম্বুলেন্সটির সামনে। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছনোর জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতেই ছুটছিল। আচমকা বাছুরটি লাফিয়ে সামনে চলে আসায় অ্যাম্বুলেন্সটি চালক বাছুরটিকে পাশ কাটাতে গিয়েছিল কিন্তু গাড়ির গতি দ্রুত থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারায় চালক। বাছুরটির সঙ্গে সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়নি। সেটিকে ধাক্কা মেরেই অ্যাম্বুলেন্সটি উল্টে যায় এবং তিন চারবার পাক সেটা উত্তর দিকের লেনে গিয়ে পড়ে। ঘটনায় মারাত্মক চালক এবং রোগী সহ মোট চারজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় মানুষজন তাঁদের উদ্ধার করে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে খড়গপুর লোকালের বাসিন্দা খড়গপুর শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দুরে পানাছাত্র গ্রামে। রবীন্দ্র নাথ বাঘরা শারীরিক অসুস্থতার জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর ক্যানসার ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ ছিল। শনিবার তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে নিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা কলকাতার এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন বেলা ১১টা নাগাদ। রোগীর সঙ্গে তাঁর ছেলে প্রশান্ত বাঘরা, আত্মীয়
সুরেন্দ্র নাহারি এবং জামাই পিংলার কুসুমদার বাসিন্দা বরুন সামন্ত ছিলেন। প্রশান্ত এবং সুরেন্দ্রর আঘাত বেশ গুরুতর। চালক অবশ্য সুস্থই আছেন।
ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই অ্যাম্বুলেন্স করেই কলকাতার উদ্দেশ্যে ফের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে এই দুঘর্টনার জেরে বেশ কিছু ক্ষন ডেবরা কলকাতা জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পরে ডেবরা থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে যান চলা স্বাভাবিক করে। ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় সড়কের ওপর গরু বা বাছুর উঠে আসে কী করে? পাশাপাশি চালক কত দ্রুত গাড়ি চালাচ্ছিলেন যে তিনি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলেননা। তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।