নিজস্ব সংবাদদাতা: অবশেষে বার্ন ইউনিট হচ্ছে শিল্প শহর হলদিয়ায়? সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করতে পারলে হয়ত বেঁচে যেতে পারত মানুষটা, ফি বছর কোনও না কোনও কারখানায় অগ্নিকাণ্ড জনিত দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া পরিবারগুলিকে কী তাহলে আর এমন আফসোস করতে হবেনা! এত বড় শিল্প শহর যেখানে একাধিক তৈল শোধনাগার, রাসায়নিক শিল্প সেখানে বার্ন ইউনিট নেই! এই বদনাম কী তবে ঘুচতে চলেছে এবার? এই প্রশ্ন গুলি এখন ঘোরা ফেরা করছে শিল্প শহরে কারন জানা যাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরকে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) হলদিয়া প্ল্যান্ট। আইওসির কর্তাদের দাবি ওই ১০ কোটি টাকার মধ্যে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় একটি অত্যাধুনিক বার্ন ইউনিট গড়ে তোলা হবে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি ৪ কোটি টাকার বার্ন ইউনিট ছাড়াও হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে আরও একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়া হবে। এ ছাড়াও হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের ওপর চাপ কমাতে মহিষাদলের বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ১০ শয্যার সিজার ইউনিট করা হবে। শুক্রবার প্রস্তাবিত বার্ন ইউনিট স্থলটি ঘুরে দেখেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ও আইওসি আধিকারিকদের যৌথ প্রতিনিধি দলটি। ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায়, হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুভাষ মাহাত, আইওসির জনসংযোগ আধিকারিক রাজীব মন্ডল প্রমূখরা। বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন হলদিয়াবাসী কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে সত্যি সত্যি হবে তো? প্রশ্নটা এই কারনেই যে, শুধু টাকা আর পরিকাঠামো হলেই তো বার্ন ইউনিট হয়না। দরকার চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা কর্মী। সেই সব দিতে পারবে তো রাজ্য সরকার?
উদাহরন হিসেবে উঠে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপু্র মহকুমা হাসপাতালে অবস্থিত চালু না হওয়া ট্রমা ইউনিটের কথা। এক যুগ আগে কেন্দ্রের সড়ক পরিবহন মন্ত্রক কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল ওই ট্রমা ইউনিট গড়ে তোলার জন্য। উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাগ্রস্ত আহত ব্যাক্তিদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। বহুমূল্য যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদি ব্যবহারের অভাবে সব নষ্ট হয়ে পড়েছে। রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ইত্যাদি না জোগাতে পারায় চালুই করা যায়নি ওই ট্রমা ইউনিট। এক্ষেত্রে সরকার সেই মানব সম্পদ সরবরাহ করতে পারবে তো? ২০১৯ হলদিয়া পেট্রোক্যামে, ২০২১ আইওসি এবং ২০২২ ফের সেই আইওসিতেই অগ্নি দুর্ঘটনা। তিন ঘটনায় মৃত্যু অন্তত ১০ জন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আহতদের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে আড়াই ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পথ ভেঙে কলকাতায় ছুটতে হয়েছে। অবস্থাটা এবার সত্যি সত্যি বদলাবে? উত্তর খুঁজছে শিল্প শহর।