নিজস্ব সংবাদদাতা: গায়ের জোরে মেয়ের প্রেমকে অস্বীকার করেই অন্যত্র বিয়ে দিয়েছিল পরিবার কিন্তু সরানো যায়নি মেয়েকে। বিয়ের ২ বছর পেরিয়ে গেলেও দুজনের কেউই ভুলতে পারেনি দুজনকে। কিন্তু তরুণী যে অন্যের স্ত্রী! এই সমাজ সংসার সব কিছু ভেঙে দুজনের কাছে আসা প্রায় অসম্ভব ধরে নিয়েই তাই চির মুক্তির দেশে চলে গেলেন প্রেমিক প্রেমিকা।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/03/Screenshot_20220320-202131_Gallery.jpg)
একা একা কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারবেননা তাই একসাথে আত্মহত্যা করলেন দুজনে। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের এই ঘটনায় হয়ত ওই দুই তরুণ-তরুণীকে হঠকারী বলাই যায় কিন্তু এই মৃত্যুর দায় কী এড়াতে পারে পরিবারও? উঠেছে সেই প্রশ্নও।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে রবিবার সাত সকালেই ভগবানপুরের সুবোধপুর গ্রামের একটি শ্মশানের গাছে দুটি দেহ ঝুলতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। দেখা যায় একই শাড়িতে ঝুলছেন তরুণী ও যুবক। মৃত তরুণী ও যুবককে সোনামনি প্রধান (২৪) এবং প্রশান্ত সামন্ত (২৫) বলে সনাক্ত করেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/03/Screenshot_20220320-202111_Gallery.jpg)
জানা গেছে ভগবানপুরের বাবিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোনামণি। আর পশ্চিম ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত। বছর চারেক আগে সোনামনির বিয়ে দেওয়া হয় খাগা গ্রামের নন্দী প্রধান নামে এক যুবকের সাথে। বিয়ের পরেই সোনামনিকে নিয়ে মুম্বাই চলে যান তাঁর স্বামী নন্দী প্রধান। সেখানে একটি সন্তানও হয় তাঁদের। যার বয়স ৩ বছর।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই প্রেমে আবদ্ধ হয়েছিলেন সোনামনি আর প্রশান্ত । দুজনের মধ্যে নিবিড় প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল কিন্তু এই সম্পর্ক মেনে নেননি সোনামনির পরিবার। বরং সোনামণি আর প্রশান্তর প্রেমকে উচ্ছেদ করার জন্যই যেন সোনামনির অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। সমাজ,সংস্কার, লোক লজ্জার বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেননি তরুণী। শক্ত আয়ের ভীত না থাকায় এগিয়ে আসতে দ্বিধা ছিল প্রশান্তর। শুধু অবিকল রয়ে গেছিল প্রেম টুকু। দুজনের মধ্যে টান কমেনি। এর মাঝে পেরিয়ে বেশ কয়েকটা বছর। মাস ছয়েক আগে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে মুম্বাই থেকে খাগা গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন সোনামনি। ফের ঝালিয়ে ওঠে পুরানো সম্পর্ক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিকে দুদিন আগেই বাপের বাড়ির একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য বাবিয়া গ্রামে আসেন সোনামনি। কয়েকদিন আগে মুম্বাই ফেরৎ সোনামনির স্বামীই ছেড়ে দিয়ে যান স্ত্রী ও পুত্রকে। শনিবার রাতে আচমকা বাড়ি থেকে বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। রবিবার সকালে মেলে দেহ। মনে করা হচ্ছে, প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন পূরণ হবে না, তা বুঝতে পেরেই একসঙ্গে মৃত্যুর পথ বেছে নিল যুগল। যদিও এই জোড়া মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সোনামনির পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে প্রেমের কথা জানতে পেরে সোনামনির স্বামীই খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে দুজনকে। যদিও প্রেমের কোনও কথা জানতেননা বলে দাবি সোনামনির স্বামীর। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশ। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।