নিজস্ব সংবাদদাতা: শেষ অবধি গ্রেফতার করা হল দিঘার হোটেলে আত্মহত্যাকারী ব্যবসায়ীর প্রেমিকা সঙ্গিনীকে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া যুবতী যিনি পেশায় একজন বার ডান্সার যাঁর নাম মালা ঘোষ তাঁকে সোমবার থেকেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। মঙ্গলবার মৃত ডানকুনির ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীর দাদা শ্যাম উপাধ্যায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন দিঘা থানায়। এরপরই গ্রেফতার করা হয় ওই যুবতীকে। পুলিশ আরও জানিয়েছে ওই যুবতীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনায় আরও ১জনের উপস্থিতির সন্ধান মিলেছে বলেও জানা গেছে। পুলিশ তারও খোঁজ করছে।
উল্লেখ্য গত সোমবার সকালে নিউ দিঘার একটি হোটেল থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া গেছিল হুগলির ডানকুনির গোকুলধাম দিল্লি রোডের বাসিন্দা তেতাল্লিশ বছরের রাম উপাধ্যায়কে। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানায় মৃত্যু হয়েছে রামের।
এরপরই ওই হোটেলের রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। আটক করা হয় রামের প্রেমিকা বার ডান্সার মালাকে। খোঁজ খবর নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন আগের দিন, রবিবার দুপুরে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলে উঠেছিলেন রাম ও মালা। ওই দিন রাতে দুজনে মদ্য পান করে এবং বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছিল পুলিশ জানতে পারে। মালা পুলিশকে জানান, গন্ডগোলের পর হোটেলের ব্যালকনিতে গিয়ে বসেছিলেন তিনি। অনেক পরে রুমে ঢুকে দেখতে পান সিলিং ফ্যানে তাঁরই ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে রামকে ঝুলতে দেখেন তিনি। এরপর একটি কাঁচের গ্লাস ভেঙে ওড়নার কেটে রামকে নামিয়েছিলেন। ওই সময়ও বেঁচে ছিলেন রাম। তাঁর শ্বাসক্রিয়া চলছে দেখে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে জ্ঞান না ফেরায়, রামকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই জানা যায় রাম মৃত।
ঘটনার খবর পেয়েই রামের দাদা শ্যাম উপাধ্যায় মঙ্গলবার বিকালে উত্তরপ্রদেশ থেকে সরাসরি দিঘায় এসে পৌঁছান। অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। এরপরই গ্রেফতার করা হয় উত্তর চব্বিশ পরগণার নপাড়ার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের মালা ঘোষকে। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে কমলনারায়ণ দুবে নামের ওপর এক ব্যক্তির। রামের পাশাপাশি এই কমলের সাথেও মালার বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছেন রামের দাদা। তাঁর আরও দাবি মালা এবং কমল মিলেই রামকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর। বুধবার কাঁথি আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্তের স্বার্থে ধৃত মালাকে ৫ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। দিঘা থানার ওসি বুদ্ধদেব মাল বলেন, ‘ আমরা কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছি। হোটেল থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশকিছু নমুনা। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য পেতে চাইছি। আরও একজনের খোঁজ চলছে।’