![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/10/IMG-20221011-WA0007.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: কথায় আছে রাজকন্যা আর অর্ধেক রাজত্ব। কিন্তু এখানে অর্ধেক নয় রাজকন্যার সাথে অফার ছিল পুরো রাজত্বেরই। তিনি একে সুন্দরী যুবতী, বাবার একমাত্র সন্তান এবং সরকারের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক যাঁর বেতন লাখ ছুঁয়ে, এমন একজন মহিলার কাছ থেকে বিয়ের অফার পেলে হামলে পড়া তো স্বাভাবিক তাই না! কিন্তু সেই হামলে পড়ার মূল্য কত হতে পারে? পুলিশের অনুমান এখনও অবধি যা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে প্রায় ৮২ লাখের মত। তবে অঙ্কটা আরও বেশি লোভের মাথায় মুখ পুড়িয়ে সামনে আসতে চাইছেনা অনেক মুখপোড়ার দল। ম্যাট্রিমনি সাইট বা বিবাহ সংক্রান্ত অন লাইন খোঁজ খবরের মাধ্যমে গোটা পাঁচেক প্রোফাইল। বিয়ে করার প্রস্তাব এবং বিয়ে হয়ে গেলে ‘সবই তোমার’ মার্কা বিজ্ঞাপন।
পূর্ব মেদিনীপুরের এমনই এক শ্রেয়া মুখার্জীকে বিয়ে করার জন্য কথাবার্তা চালাতে গিয়ে তাঁর সাথে আলাপ হয় হলদিয়ার দুর্গাচক এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থার কর্মী কৃষানু মহাপাত্র নামে এক যুবকের আলাপ হয়। কৃশানু জানতে পারে শ্রেয়া পেশায় রাজ্য সরকারের বিপর্যয় দফতরের আধিকারিক। নিজে বেসরকারি কর্মী কিন্তু বউ যদি সরকারি আধিকারিক হয় বিষয়টা নিশ্চিত ভাবেই জমে ক্ষীর। আলাপ পরিচয়, কথাবার্তা, ছবি আদান প্রদান চলতে থাকে। এরই মধ্যে ‘ অসুস্থ’ হয়ে পড়ে শ্রেয়ার বাবা। প্রচুর টাকা দরকার, টাকার জোগান দেয় কৃষানু। মোট ২৯ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা। কখনও অনলাইনে, কখনও অ্যাকাউন্টে। কথা ছিল বাবা ভালো হয়ে উঠলেই সব টাকা ফেরত দিয়ে দেবে। কিন্তু এক টাকাও ফেরত পাননি কৃষানু।
ওদিকে যখন শ্রেয়া কৃষানুর টাকা লুটছে তখন রূপসা মুখার্জী নামক আরেক যুবতী লুটছে হাওড়া জেলার জগাছা থানা এলাকার এক ব্যবসায়ীর টাকা। একই কায়দা, একই কৌশল। এর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ। ওদিকে তমলুকের আরেক যুবক দিয়েছেন ৭ লক্ষ টাকা। সবে মাত্র তার ফাঁদে পড়েছিল কলকাতার মানিকতলা এলাকার এক যুবক। ৩৫ হাজার টাকা গচ্চা দিয়ে কমসমে বেঁচে গিয়েছেন তিনি। তবে পুলিশের ধারণা সম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে চাইছেনা। যাইহোক বারবার টাকা ফেরত চেয়ে না পাওয়া তো দূরের কথা শ্রেয়ার সংগে কোনও বারই দেখাই করতে পারেননি কৃষানু। বারবার বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে গেছে সে। এরপরই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। আর তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। হায় হরি! কোথায় রূপসা আর কোথায় শ্রেয়া? এ তো পুরুষ মানুষ।
পুলিশ জানিয়েছে মেয়েলি গলায় কথা বলতে ওস্তাদ হলদিয়ার দুর্গাচক থানার খঞ্জনচক এলাকার যুবক সৌমেন দাসই রূপসা কিংবা শ্রেয়া নামে এই প্রাতরনার ফাঁদ পেতে বসেছিল। পূজার মধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে সৌমেন কে আর জানতে পেরেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অভিনেত্রীর ছবি নিজের প্রোফাইলে সেঁটে পুরুষ মৌমাছিদের নিজের ফাঁদে ফেলত সৌমেন। পুলিশকে সৌমেন জানিয়েছে, মহিলা কন্ঠে কথা বলার দক্ষতাকে পরখ করতে গিয়েই এই অভিনব কায়দায় প্রতারণা জগতে চলে আসে সে। তবে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে উঁকি দিয়ে পুলিশ প্রতারণার টাকার সন্ধান পায়নি পুলিশ। এত টাকা কোথায় সরালো সে তারই খোঁজ চলছে এখন।