নিজস্ব সংবাদদাতা: গদ্দার অভিযোগে খড়গপুরের এক বিজেপি নেতাকে চড় থাপ্পড় মারার পর কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল খড়গপুর শহর বিধায়ক হিরণ অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ গোটা ঘটনাটাই ঘটেছিল হিরণের উপস্থিতিতে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আর এক নেতাকে ‘গদ্দার’ চিহ্নিত করে তাঁর বাড়ি ধাওয়া করে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসার অভিযোগ উঠল সেই হিরণ বাহিনীর বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধ্যায় খড়গপুর শহর লাগোয়া একটি এলাকায় বসবাসকারী বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সদস্য উমাশঙ্কর রায় এমনই অভিযোগ করেছেন খড়গপুর গ্রামীন থানায়।
উমাশঙ্করের অভিযোগ, নির্বাচনের ফল বেরুনোর পর থেকেই নিজেরই দলের হিরণ গোষ্ঠীর কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি বিভিন্ন ধরনের হুমকি পাচ্ছিলেন কিন্তু শনিবার যা হয়েছে তাতে তিনি আতঙ্কিত। ওই দিন বিকেলে কয়েকটি ফোন থেকে হুমকি পাওয়ার দশ মিনিটের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে তার বাড়িতে চড়াও হয় হুমকি প্রদানকারী পিনাক মল্লিক, শুভজিৎ ভট্টাচার্য, সুখচাঁদ খটিক, সুরজ সোনকার সহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। তারা উমাশঙ্করকে বাইরে আসার জন্য আহ্বান করতে থাকে। আতঙ্কিত উমাশঙ্করের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে তারা চলে যায় কিন্তু শাসিয়ে যায় এই বলে যে খড়গপুরে যেখানেই তাকে দেখা যাবে সেখানেই খতম করে দেওয়া হবে তাকে।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা খড়গপুর শহরে বিজেপি বিধায়ক তথা খড়গপুর পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য জয়ী কাউন্সিলর হিরণ অনুগামী বলেই পরিচিত। বিষয়টি নিয়ে হিরণ ব্যঙ্গের স্বরে বলেন, ” ওই অভিযুক্তরা দলীয় নেতার জন্য ফুল নিয়ে গেছিলেন ওনাকে সম্বর্ধনা দিতে কারন উনি দলের নেতা। আর ওনার দৌলতে দল জিতেছে।” এরপরই হিরণ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, আমাকে হারানোর জন্য বিজেপির যে সমস্ত জেলা নেতারা উঠে পড়ে লেগেছিলেন তাঁদের মধ্যে উনিও একজন। আরেক অভিযুক্ত নেতা চঞ্চল করের সঙ্গে ওই নেতার ৬৭টি কল রেকর্ড রয়েছে যাতে বোঝা যাচ্ছে ওনারা কী কী করেছিলেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে হারানোর জন্য।’
উল্লেখ্য এই চঞ্চল কর ই হল সেই নেতা যাকে গদ্দার অভিযুক্ত করে কয়েকদিন আগে মারধরের পর দলীয় কার্যালয় থেকে বের করে দিয়েছিল হিরণ অনুগামীরা। চঞ্চল করের মতই উমাশঙ্করও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল বলে হিরণ জানান। যদিও উমাশঙ্কর জানিয়েছেন, প্রথমে দল তাঁকে ৩৩ নম্বরের দায়িত্ব দিলেও হিরণ তাঁকে কোনও সহযোগিতা না করায় তিনি দলের কাছ থেকে অন্য ওয়ার্ডের দায়িত্ব চান এবং তাঁকে ২৪নম্বরে সরিয়ে নেয় দল। হিরণের পাল্টা বক্তব্য, উমাশঙ্কর গদ্দারি করছে জানার পরই তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।