নিজস্ব সংবাদদাতা: বিয়ের ১বছরও গড়ায়নি এক গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করলেন বাপের বাড়ির লোকেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ যে নিচু জাত ভুক্ত হওয়ার জন্যই শুরু থেকেই এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি পাত্রের পরিবার আর সেই কারণেই বিয়ের পর থেকেই লাগাতার নির্যাতন চলছিল মৃতার শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার তোড়িয়া-মহাজারপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম বিউটি দোলই নায়েক(২০)। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে বিউটির বিয়ে হয় শুভজিৎ নায়েকের সঙ্গে। বিয়ের আগে দুজনের মধ্যে প্রেম ছিল। বিউটির বাবা সজল দোলাইয়ের অভিযোগ, প্রেমের বিয়ে স্বত্ত্বেও তাঁরা নগদ ১লক্ষ টাকা এবং প্রায় ২ভরি সোনার গহনা দিয়েছিলেন পাত্রপক্ষের দাবি মত। পাশাপাশি দানসামগ্রীও দিয়েছিলেন।
পাশের থানা কেশপুর এলাকার বাসিন্দা সজলের অভিযোগ, সেই পণ দেওয়ার পরও বিয়ের পর থেকে আরও টাকার দাবি করছিল ছেলের পরিবার। সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা ছিলনা তাঁদের। ফলে বিউটির ওপর অত্যাচার শুরু হয়। তার কারণ তাঁরা নিচু জাত ভুক্ত। সজল দোলইয়ের অভিযোগ, ‘আমরা তপশিলী জাতি, নিচু জাত। ওরা সদগোপ উঁচু জাত। ছেলে-মেয়ে প্রেম করে বছর খানেক আগে বিয়ে হয়েছিল। এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি বলেই এই অত্যাচার চলত। সেই অত্যাচারের ফলেই মারা গেছে তাঁদের মেয়ে যাকে পরে গলায় ফাঁসস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় । যদিও এই অত্যাচারের পেছনে পাত্রের কোনও ভূমিকা ছিলনা বলেই জানিয়েছেন সজল। তাঁর কথায়, জামাই শুভজিৎ নায়েক আমার মেয়ে-কে খুব ভালো বাসত। জামাইয়ের কোনও দোষ নেই।
তাঁদের মেয়ে ৩ মাসের গর্ভবতী ছিলেন জানিয়ে গৃহবধূর বাবার দাবি, ‘জামাইয়ের বাবা-মা, জেঠু এবং জেঠুর এক ছেলে আমার মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে।’ আনন্দপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সোমবার সকাল বেলায় বিউটির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সজল দোলাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাও রুজুর পাশাপাশি মৃত গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়ি চিত্তরঞ্জন নায়েক ও ঝর্ণা নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই বাকি প্রক্রিয়া চালু করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এখন আপাততঃ জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ধৃতদের।