শশাঙ্ক প্রধান: এক ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় সবংয়ের তেমাথানি থেকে অনতি দুরে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ বছরের মোটরবাইক চালক যুবকের। তাঁর সঙ্গী আরোহী এক ১৯ বছরের তরুনের পা ঘটনাস্থলেই কেটে পড়েছে। শনিবার রাত্রি সাড়ে নটা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সবং ব্লকের বেনেদিঘির এলাকার ওই দৃশ্য দেখার পর শিউরে উঠেছেন স্থানীয় মানুষ জন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন প্রায় ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় ছুটে আসছিল বাইকটি এবং সরাসরি সেটা ধাক্কা মারে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কার বা ব্যক্তিগত চারচাকার গাড়িকে। মুহূর্তেই বাইক থেকে অন্ততঃ ১৫ ফুট উঁচুতে উঠে সড়কের ওপর আছড়ে পড়ে বাইক চালক। মাথায় হেলমেট না থাকায় পাকা রাস্তার মাথা পড়ে তা কার্যত দু’ফাঁক হয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত বাইক চালকের নাম তারক মিত্র। তাঁর বাড়ি বেনেদীঘিতে। অন্যদিকে পা কেটে পড়ে যাওয়া গুরতর আহত তরুনের নাম শুনারাম হেমব্রম (১৯) তার বাড়ি সবংয়ের বসন্তপুর এলাকায়। তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
জানা গেছে মৃত তারক মিত্র একজন ট্রাক্টর মালিক। কখনও চাষের কাজে কখনও বা মাটি ইত্যাদি বহন করার কাজে ট্রাক্টর ভাড়ায় খাটাতেন তারক।শুনারাম সেই ট্রাক্টর চালাত। প্রতিদিনের মতো কাজ শেষ হওয়ার পর তারক শুনারামকে তার বাড়ি বসন্তপুর পৌঁছে দিতে বাইকে করে নিয়ে আসছিলেন। সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ের কিছুটা আগেই ডেবরা-পটাশপুর রাজ্য সড়কের ওপর উল্টোদিক থেকে আসা প্রাইভেটকার টিকে সরাসরি ধাক্কা মারেন তারক। অনেকের মতে যেন গাড়ির মুখোমুখি নিজেই বাইক সমেত ঢুকে গিয়েছিলেন তারক। বাইকের পেছনে থাকা এক সাইকেল আরোহী জানিয়েছেন, “পাগলের মত ছুটছিল বাইকটি। রাস্তার মধ্যে কয়েকবার টালও খেয়েছিল। তখনই মনে হচ্ছিল আজ একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়েই ছাড়বে ওরা আর ভাবতে ভাবতেই ঘটনাটি ঘটে গেল।”
সংঘর্ষের জোরালো আওয়াজ শুনে স্থানীয়রা ছুটে আসেন এবং দুজনকেই নিকটবর্তী চিকিৎসা কেন্দ্র পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এক জনের অবস্থা আসঙ্কা জনক হওয়ায় তড়িঘড়ি তাকে মেদিনীপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তারকের, অন্যজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার পিজি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, চোখের সামনে আহত তরুনের ডান পা হাঁটু থেকে খুলে পড়ে থাকতে দেখেছেন তাঁরা। কী ভয়ঙ্কর সংঘর্ষ হলে শরীর থেকে পা খুলে যেতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। শুনারামের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, চালক এবং আরোহী দুজনেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। কারন প্রায় দিনই ফেরার পথে মদ খেত এমন অভিজ্ঞতা তাঁদের রয়েছে। তাঁদের আরও দাবি মদ খেয়ে বেহেড হয়ে পড়াতেই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত তারকের বাড়িতে একটি ৫ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। ঘটনায় শোকে বাকরুদ্ধ গোটা পরিবার।