নিজস্ব সংবাদদাতা: একে রাস্তার বেহাল দশা তার ওপর গ্রামীন রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ির বেপরোয়া দাপট। আর তারই জেরে প্রাণ দিতে হল এক পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে। ঘটনার জেরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে দুর্ঘটনাস্থল। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা পথ অবরোধ করেন, চলে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/03/IMG-20220309-WA0046.jpg)
মৃতদেহ উদ্ধার করতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকেও। বুধবার এমনই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার কলমিজোড় গ্রাম সংলগ্ন গ্রামপঞ্চায়েত কার্যালয়ের কাছাকাছি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ছাত্রীর নাম নাতাশা পড়িয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ১০ বছরের নাতাশা তার অন্য দুই সহপাঠিনীর সঙ্গে থেকে কলমিজোড় গ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে নিজের স্কুল ব্রাহ্মণ বসান উচ্চবিদ্যালয় দিকে যাচ্ছিল। পাশাপাশিই যাচ্ছিল তিনজন। ওই সময় বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসছিল একটি মেশিন ট্রলি। মেশিন ট্রলিটি এতটাই দ্রুত গতিতে আসছিল যে তাড়াহুড়ো করে তিনজন রাস্তা থেকে নিচে সরে যেতে চায়। কিন্তু রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকায় টাল সামালতে না পেরে নাতাশা সাইকেল থেকে পড়ে যায় রাস্তার উপরেই। মেশিন ট্রলির পিছনের চাকায় ঢুকে যায় নাতাশার দেহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পেছেনের চাকা নাতাশার বুকের ওপর দিয়ে গড়িয়ে যেতেই নাক মুখ দিয়ে ঝলক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। যা থেকে মনে হচ্ছে ফুসফুস ফেটে গিয়েছিল তার। মেশিন ট্রলিটি ফেঁসে যায় তার শরীরের ওপরই। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। নাতাশার মৃত্যুর খবর আসতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দাসপুরের বেলতলায় গ্রামীণ সড়ক অবরোধ করে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। টায়ার জ্বালিয়ে, বাঁশ ফেলে অবরুদ্ধ করে পথ অবরোধে সামিল হন গ্রামবাসীরা। তাঁরা তাদের অভিযোগ করতে থাকেন ওই রাস্তা বেহাল তার জেরে মাঝে মধ্যে দূর্ঘটনা ঘটে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।বেহাল রাস্তার উপর দিয়েই মেশিন ট্রলির দৌরাত্ম্য বেড়ে চলেছে যার জেরে আজ এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর প্রাণ গেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যায় দাসপুর থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সাথেও বচসায় জড়িয়ে পড়ে অবরোধ কারীরা।মৃতার আত্মীয়াকে দেখা যায়, পুলিশ আধিকারিকের পা জড়িয়ে কাকুতি মিনতি করে অনুরোধ করতে যাতে তাঁদের মেয়ের জীবন পুলিশ ফিরিয়ে দেয়। ঘটনায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে পুলিশ। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, যেখানে গ্রামীন রাস্তায় ১০টনের বেশি পরিবহন নিষিদ্ধ সেখানে ৫০টন অবধি পণ্য পরিবহন করে লরি, ট্রলি ইত্যাদি। ফলে মাত্র ৪ফুটের ঢালাই রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। পরে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করাতে সমর্থ্য হয়।