নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে! ভালোবাসার দিবসে স্ত্রীর জন্য চাঁদের জমি কিনে দিলেন মেদিনীপুরের শিক্ষক। হাতে সেই জমির দলিল পেয়ে আপ্লুত অধ্যাপিকা স্ত্রী। খবর পেয়েই টনক নড়েছে প্রতিবেশী কিছু মানুষেরও। তাঁরাও খোঁজ নিচ্ছেন চাঁদে আর জমি আছে কিনা? খোঁজ নিচ্ছেন বিশেষ করে সেই সব প্রেমিকের দল যাঁরা সামনের বছর প্রেমিকাকে এরকম একটা জমি কিনে দেওয়া হয় কিনা ভাবছেন। যদিও ওই শিক্ষক জানিয়েছেন, এবার বিশেষ অফার থাকায় ছাড় পেয়ে গেছিলেন তাই জলের দরে মিলে গিয়েছে। সামনের বছর কি হবে বলা মুশকিল।
পূর্ব মেদিনীপুররের পাঁশকুড়ার ওই স্কুল শিক্ষকের এ হেন অভিনব উপহার দেওয়ার ঘটনা জানার পর বেশ হৈচৈ পড়ে গেছে। ওই শিক্ষক পাঁশকুড়ার দক্ষিণ চাঁচিয়াড়া গ্ৰামের বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী। তাঁর স্ত্রী সায়ন্তিকা তাম্রলিপ্ত কলেজের অধ্যাপিকা। শান্তনু পূর্বচিল্কা লালচাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বছর কয়েক আগে ঘর বেঁধেছেন তাঁরা। বিয়ের পর থেকেই ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষ্যে লাল গোলাপের সাথে দিতেন পার্থিব উপহার । কিন্তু এবছর একটু অন্যরকম কিছু উপহার দিতে চেয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন শান্তনু। আর সেই খোঁজ খবর নিতে গিয়েই ফেসবুক, ইউটিউব ঘেঁটে শান্তনু জানতে পারেন চাঁদে জমি কেনাবেচাতে কয়েকশ গুন ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন চাঁদের জমি কেনার।
শান্তনু বলেন, ‘ জানুয়ারিতে আমেরিকার লুনার এমব্যাসি নামে একটি সংস্থার চাঁদে জমির দামের ওপর ছাড় ঘোষণা করেছিল। ওই সংস্থার মাধ্যমে ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে পৃথিবীর চাঁদে কিনে ফেলি এক একর জমি।’ রবিবার এসে পৌঁছায় জমি কেনার শংসাপত্র। আর সোমবার প্রেম দিবসের সকালে সেই শংসাপত্র উপহার স্বরূপ সায়ন্তিকার হাতে তুলে দেন শান্তনু। যা পেয়ে আপ্লুত সায়ন্তিকাও। বলেন, ‘ ছোট বেলায় শুনতাম বাবা চাঁদ এনে দেবে বলত। কিন্তু স্বামীর থেকে এমন উপহার পেয়ে ভাবিনি।চাঁদে কেনা জমির শংসাপত্র হাতে পেয়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। জমির মালিকানা বদলের সুবিধাও রয়েছে। আমরা না যেতে পারলেও আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেখানে যেতে পারবে।’
এদিকে চাঁদে জমি কেনা বেচার খবরটা জানতে পেরেই খোঁজ খবর নিচ্ছে অনেকেই। না, শুধুই যুবক যুবতীর দল নয়, খোঁজ নিচ্ছে কৃষকরাও বিশেষ করে ফুল চাষীরা। শান্তনু জানালেন, ক্ষীরাই সেতুর পাশেই ফুলের চাষ করেন এমন একজন কৃষক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছেন চাঁদে ফুলের চাষ করা যাবে কীনা। ওই ব্যক্তি বলেছেন, এবছর বারংবার বৃষ্টিতে মার খেয়েছে ফুলের চাষ তাই উনি চাঁদে জমি কিনে ফুলের চাষ করতে চান। আরেকজন কৃষক আবার জিজ্ঞাসা করেছেন জমির মিউটেশন পাঁশকুড়া ব্লকেই করা যাবে কীনা?