নিজস্ব সংবাদদাতা: দিঘার পর এবার কাঁকড়া খেয়ে মৃত্যু হল সৈকতাবাস তাজপুরে। যদিও চিকিৎসকরা এখুনি মৃত্যুর কারণ হিসেবে কাঁকড়া ভক্ষনের কথা বলেননি তবে মৃত পর্যটকের পরিবার তেমনটাই জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃতের নাম সুদীপ মুখার্জি (৬১)। উত্তর চব্বিশ পরগণার সোধপুর থানার পানিহাটি শুকচার ১৩৯ নরসিংহ দত্ত ঘাট রোডের বাসিন্দা তিনি। জানা গেছে সুদীপ বাবু শনিবার সপরিবারে বেড়াতে আসেন দিঘায়। রবিবার তাঁদের ভ্রমনসূচিতে ছিল তাজপুর। কিছুটা বেলায় দিঘা থেকে রওনা হয়ে দুপুরে তাঁরা তাজপুরে পৌঁছান। আগে স্থানীয় হোটেলে খাওয়া দাওয়া করেন। মেনুতে ছিল কাঁকড়া। খাওয়াদাওয়ার পর সমুদ্রস্নানে নামেন সুদীপবাবু এবং পরিবারের কয়েকজন।
পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে স্নানের মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুদীপবাবু। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় দিঘা হাসপাতালে। যদিও পথিমধ্যেই তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে। তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। দিঘা হাসপাতালে পৌঁছনোর পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানান, তাজপুরের হোটেলে দুপুরের খাবারে কাঁকড়া খেয়েছিলেন। চিকিৎসকরা অবশ্য সে কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে কিনা তা অবশ্য জানাতে পারেননি। তাঁরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরই নিশ্চিত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার পুলিশএকটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে ওসি অমিত দেব বলেন, ‘ কাঁকড়া খাওয়ার পর ওই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে তাঁর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’ এদিকে দিঘায় বেড়াতে এসে কাঁকড়া একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলায় উদ্বিগ্ন পর্যটকরা। এর আগে গত বছরই দুটি পরপর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে কাঁকড়া খাওয়ার পরিণামে। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মারা গিয়েছিলেন কলকাতার বেহালার বাসিন্দা বছর বাইশের সৌম্যদীপ শিকদার ও বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বাসিন্দা বছর ঊনিশের দীপিকা ভকত। পুলিশ জানিয়েছিল দুজনেরই পরীক্ষিত ভাবেই কাঁকড়া অ্যালার্জির ধাত ছিল বলে জানা গিয়েছিল।কাঁকড়া খাওয়ার পর তাঁদের মুখে-ঠোঁটে অস্বস্তি শুরু হয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়।
এর কিছুদিন পরেই দিঘার বিভিন্ন হোটেল ও খাবার স্টলগুলিতে তল্লাশি চালায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রচুর নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়। সেই তল্লাশিকারী চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ দলটি জানিয়েছিলেন নানা রকম বেনিয়ম ধরা পড়েছে বলে। বাসী খাদ্য, রঙ করা খাদ্য ইত্যাদি নানা বেনিয়মের জন্য প্রচুর খাবার নষ্ট করে দেওয়াও হয়েছিল। কিন্তু তারপর সবই চুপচাপ। আর দিঘাতে যদিও বা নজরদারি চলে কিন্তু মন্দারমনি, তাজপুরে কে দেখতে যাচ্ছে? ফলে নতুন করে কাঁকড়া খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা চাউর হতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে সৈকত নগরীতে।