নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাড়ির ছেলেটা কিশোর হোক আর যুবক, ২৪ ঘন্টা স্মার্টফোনের সঙ্গে থাকলে সাবধান হোন। স্মার্ট ফোনের দৌলতে হাতের মুঠোয় পর্ন বা যৌন দুনিয়া যা আকছার বিপথগামী করছে কৈশোর আর যৌবনকে আর তা কতটা সাংঘাতিক হতে পারে তারই নজির রইল পশ্চিম মেদিনীপুর। কামতাড়িত এক যুবক ধর্ষন করল ৬২ বছরের প্রৌঢ়াকে। একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের ওই প্রৌঢ়ার
অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। পুলিশ ওই যুবককে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানা এলাকার একটি গ্রামে। ওই গ্রামের একটি অবস্থাপন্ন পরিবারের সদস্য ওই বৃদ্ধ দম্পতি। তাঁদের দুই ছেলে প্রতিষ্ঠিত ও কর্মসূত্রে প্রবাসী। বৃদ্ধ স্বামী অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী। পরিবারের দেখভাল করার জন্য গ্রামেরই এক যুবককে নিযুক্ত করেছিলেন ওই বৃদ্ধ দম্পতির ছেলেরা। যুবকটি নিজের বাড়িতে চাষ আবাদ করে আর ওই দম্পতির বাজার হাট, ওষুধপত্র ইত্যাদি প্রয়োজন মত এনে দেয়। ২৪ আগষ্ট রাত ১২টা নাগাদ ওই বাড়িতে প্রবেশ করে ওই যুবক এবং ওই প্রৌঢ়াকে ধর্ষন করে। পুরো ব্যাপারটা ঘটে ওই প্রৌঢ়ার স্বামীর সামনেই কিন্তু যেহেতু তিনি নড়াচড়া করতে অক্ষম তাই নির্বিকার দর্শক হয়েই থাকতে হয় তাঁকে।
পুলিশ জানিয়েছে এরপর ওই দম্পতি বিষয়টি জানায় ছেলেদের। তাঁদের পরামর্শ মত শুক্রবার বিকেলে চন্দ্রকোনা থানার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপরই অভিযুক্ত ওই যুবক শ্যামাপদ সাঁতরা(২৫) গ্রেফতার করে পুলিশ । শনিবার ঘাটাল আদালতে পেশ করার পর নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসবাদ ও তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে এও জানা গেছে রাতে খাওয়া দাওয়ার পর বাড়ির সদর দরজা লাগিয়ে দিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়া। হিসাব অনুযায়ী ওই যুবকের তখন আসার কথাই নয়। বাড়ির কোনও একটি অংশ দিয়ে দোতালার চিলে কোঠায় উঠে সেখান দিয়ে নিচে নেমে ওই দম্পতির শোবার ঘরে প্রবেশ করেছিল যুবক।
পুলিশের তরফে এই বিকৃতমনা কামের কোনও ব্যখ্যা অবশ্য দেওয়া হয়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মোবাইলে পর্ন সাইটে আসক্ত ছিল ওই যুবক। দিনের একটি বড় অংশ জুড়ে সে ওই যৌন আবেদনময় ভিডিও দেখত। এই ভয়ানক ঘটনা তারই কুফল কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। স্মার্ট ফোন আর অ্যান্ড্রয়েড দুনিয়া নানা ধরনের অপরাধের জন্ম দিয়ে চলেছে যার অন্যতম হল যৌণ অপারাধ বা সেক্সুয়েল ক্রাইম। যৌন আবেদনময় ভিডিও দেখতে দেখতে যে উত্তেজনা তৈরি হয় তা অনেকেই অবদমন করতে সক্ষম হলেও কেউ কেউ তা পারেন না। সে তখন কাম উন্মাদ হয়ে যায়। এই অবস্থায় নিজস্ব কোনও সঙ্গী না থাকলে সে দুর্বলতম বিপরীত লিঙ্গকে বেছে নেয় সে। সে কখনও শিশু, কখনও বয়স্ক কাউকে বেছে নেয়। এমন কেউ যে বাধা দিতে অক্ষম।বাবা মা, অভিভবকদের তাই সতর্ক হওয়া উচিৎ। প্রয়োজনে সন্তানদের কাউন্সিলিং করাতে হবে। অপরাধের চেয়েও বড় কথা হল এটি একটি অসূখও হতে পারে।