নিজস্ব সংবাদদাতা : ছাত্রীদের পরিচয় পত্র দেখতে দিতে হবে ছাত্রনেতাদের। আর সেই পরিচয়পত্র দেখার নাম করে অভব্য আচরণ। নোংরামি চূড়ান্ত আকার ধারন করলে কয়েকজন ছাত্রী বিষয়টি অধ্যক্ষের নজরে আনলে তিনি গিয়ে ছাত্রনেতাদের সরিয়ে দেন। পরিষ্কার জানিয়ে দেন, পরিচয়পত্র দেখার অধিকার নেই তাদের তার জন্য রয়েছে নিরাপত্তারক্ষী। আর তাতেই মর্যাদায় আঘাত লাগে শাসকদলের ছাত্রনেতাদের। নির্বিচারে তান্ডবের সাথে ভাঙচুর চালানো হয় অধ্যক্ষের কক্ষ সহ একাধিক ক্লাসরুমে। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন কক্ষের আসবাবপত্র, পাখা, লাইট সহ একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। সোমবার শাসকদলের ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে এই তান্ডবের সাক্ষী রইল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর নন্দ মহাবিদ্যালয়।
সোমবার সন্ধ্যায় মুগবেড়িয়া কলেজে ঢুকে তাণ্ডব ও ভাঙচুরের ছবি ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সমাজ মাধ্যমে। যদিও বিষয়টি নিয়ে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি মঙ্গলবার সন্ধ্যা অবধি। ভয়ে আতঙ্কে সিঁটিয়ে যাওয়া কলেজ কর্তৃপক্ষও মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে ভাঙচুর তাণ্ডবে কলেজের সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন অধ্যক্ষ স্বপন মিশ্র। তিনি বলেছেন, ‘ সোমবার সন্ধের ঘটনা। তেমন কিছুই হয়নি। এটা নিয়ে পেপারে খবর হোক আমি চাইছি না।এ ব্যাপারে কিছু জানার হলে কলেজের গভর্নিংবডির লোকজনের সঙ্গে কথা বলুন।”
অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মুগবেড়িয়া কলেজ ইউনিটের সভাপতি সুশান্ত খাটুয়া জানিয়েছেন,” ভাঙচুর হয়েছে বলে জানা নেই তবে ইউজি সেকশনের অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে সোমবার ছাত্র পরিষদ থেকে একটা আন্দোলন হয়েছিল। ভাঙচুর, গন্ডগোলের কিছুই ঘটেনি। আমাদের আন্দোলনের পর যদি কিছু হয়ে থাকে তা জানা নেই।” অথচ ছাত্রছাত্রীরা জানাচ্ছেন নাটের গুরু এই খাটুয়া এবং এবং কলেজের আরেক নেতা সৌরভ সেন। ছাত্রীদের পরিচয়পত্র দেখার নাম করে তাঁদের সাথে অশ্লীল আচরণ করছিলেন এঁরাই।
ভাঙচুর ও তান্ডবের ঘটনা যে ঘটেছে তা স্বীকার করে নিয়ে তৃনমূল ছাত্রপরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃনাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। যদিও ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পাইনি তবুও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে আশ্বস্ত করেছি আমাদের যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কোনও ক্ষমা নেই। কোনও পদে থাকলে পদ থেকে অপসারিত করা হবে আর না থাকলেও আমাদের সংগঠনের কাছে ঠেসতে দেওয়া হবেনা ওদের। আমরা বলব আইনগত যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার সব নেওয়া হোক। আমরা এদের কিছুতেই বরদাস্ত করবনা। ” ঘটনায় অবাক হননি দাবি করে এসএফআইয়ের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক জাকির হোসেন মল্লিক বলেছেন, ‘ ছাত্র ইউনিয়নের নির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে রাজ্যের শাসকদল তাদের স্নেহধন্য মাস্তানদের কলেজ ইউনিয়নের মাথায় বসিয়েছে। তারই ফলশ্রুতি এই ঘটনা। কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না।”