নিজস্ব সংবাদদাতা: দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেবে বাংলার প্রথম বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হলদিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (Haldia Institute of Technology) বা এইচআইটি। ভারত সরকারের বিশেষ অনুগ্রাহীতায় পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড ছাড়াও বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের রিয়াধে প্রযুক্তি পরামর্শ দিতে চলেছেন এইচআইটির প্রযুক্তি বিষয়ক অধ্যাপক ও গবেষকরা। বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানালেন এইচআইটির জনক তথা চেয়ারম্যান ডঃ লক্ষণচন্দ্র শেঠ।
ডঃ শেঠ জানান, “আমাদের অধ্যাপক ও গবেষকদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় এইচআইটি আজ জাতীয়স্তরে একটি স্বীকৃত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ যার ছাত্রছাত্রীরা দেশ এবং বিদেশের নানা সংস্থায় কর্মরত। সেই গর্ব তো আমাদের ছিলই তার সঙ্গে যুক্ত হল এই নতুন স্বীকৃতি। ভারত সরকারেরই ব্যবস্থাপনায় বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও রিয়াধের কিছু প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনকে আরও গুণান্বিত ও বৃদ্ধি করার কাজে সাহায্য করব আমরা। আমাদের লক্ষ্য আগামী দিনে দেশের অন্যান্য রাজ্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশগুলিতেও এই ধরনের কাজ করা।”
এইচআইটির আধিকারিকদের সূত্রে জানা গেছে এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়েছে বাংলার দুটি বন্দর কলকাতা ও হলদিয়াকে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেওয়া। বিশেষ করে ওই দুই বন্দরের বার্থগুলিকে পণ্য ওঠানো নামানোর জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রসামগ্রীর কার্যকারিতা ও জীবনীশক্তি আরও বাড়ানো। পাশাপাশি আলাদা করে হলদিয়া বন্দরে পণ্যবহনের জন্য ব্যবহৃত কনভেয়ার বেল্টগুলিকে রাসায়নিক কিংবা যৌগ সংক্রমন থেকে রক্ষা করা। ঝাড়খন্ড সরকারের উদ্যোগে ঘাটশিলা এলাকায় স্বল্পখরচে পোক্ত বাড়ি বানানোর জন্য বাঁশের নানাবিধ ব্যবহারের প্রযুক্তি কৌশলও এইচআইটি প্রদান করবে।
এইচআইটির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ” বাংলাদেশের রাইসমিলগুলি অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। সময় এবং আর্থিক সাশ্রয় করতে প্রথাগত চাল উৎপাদনের পরিবর্তে রাইসমিলের চাহিদা বাড়ছে। ওই রাইসমিলগুলির চিমনিগুলিতে কিছু গুনগত পরিবর্তন আনার ভাবনা চলছে যাতে উৎপাদিত চালের মান ও স্বাদ আরও বৃদ্ধি পায়। ওখানকার একটি বিখ্যাত রাইসমিল রুমানা কোম্পানিতে পাইলট প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করবে এইচআইটি। এটি সফল হলে সমগ্র বাংলাদেশের রাইসমিলগুলি নিয়ে কাজ করব আমরা। অন্যদিকে সৌদি আরবের রিয়াধে আমরা কস্টিক সোডা ডেভলপমেন্ট প্ল্যান্টগুলিতে প্রযুক্তি সহায়তা দিতে চলেছি।
এইচআইটির সম্পাদক তথা অন্যতম কর্ণধার আশিস লাহিড়ী জানিয়েছেন, ” নিজস্ব পঠনপাঠন ব্যবস্থার পাশাপাশি আমরা জোর দিয়েছিলাম প্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন নতুন উদ্ভাবন ও নতুন উদ্যোগপতি বা অন্টারপ্রেনার গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করতে। ইতিমধ্যে অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (AICTE) ১.১০ কোটি টাকার ম্যাচিং গ্র্যান্ট নিয়ে আমরা একটি আইডিয়া ল্যাব গড়ে তুলেছি। যা বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে আমাদের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের সাহায্য করবে। এছাড়াও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলিকে প্রযুক্তি সরবরাহ করার জন্য ভারত সরকার এইচআইটিকে মনোনিত করেছে। আমরা যত বেশি বেশি করে অন্যদের প্রযুক্তি সাহায্য দিতে পারব ততবেশি করে আমাদের অধ্যাপক, গবেষক ও পড়ুয়াদের মধ্যে আরও উদ্ভাবনের প্রবণতা বাড়বে। প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন ঘটবে।”