নিজস্ব সংবাদদাতা: ১০ দিনে উদ্ধার ১৫জন মহিলা। ১৭ থেকে ৩০ বছরের এই মহিলাদের কেউ পেশাদারী পতিতা কেউ আবার কলেজ ছাত্রী কেউ বা গৃহবধূ। কারও অভাবে কারও আবার স্বভাবে টাকা দরকার। কেউ বা আবার স্ট্যাটাস রক্ষায় হাত খরচ জোগাড় করতে চান। এঁদের সবাইকে ‘ধান্দা’ দিচ্ছে খড়গপুর হাওড়া-মুম্বাই জাতীয় সড়কের ধারে থাকা কয়েকটি হোটেল। গত ১০দিনে দু’দুবার হানা দিয়ে ২টি হোটেল থেকে মোট ১৫জন মহিলাকে উদ্ধার করেছে খড়গপুর গ্রামীন থানার পুলিশ। এরমধ্যে ১টি হোটেলেই ২বার হানা দিয়ে পাওয়া গেছে ১০জনকে।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই হোটেল গুলি মহিলা ব্যবসায় এতটাই মরিয়া যে কয়েকদিন আগেই রেইড করার পর সিল করে দেওয়া দুটি হোটেল। এরপরই কোর্টের অর্ডার নিয়ে ফের হোটেল চালু করেছে এবং চালু করেই ফের সেই মহিলা ব্যবসায় নেমেছে। সাতদিনের মধ্যে একই হোটেল থেকে দু’বার ১০জন মহিলাকে পাওয়া গেছে। ভাবতে পারেন কতটা মরিয়া এরা? ওই পুলিশ আধিকারিক আরও বলেছেন, ‘ উদ্ধার হওয়া মহিলাদের যেমন নাবালিকা পেশাদারী পতিতা আছে তেমনই রয়েছে গৃহস্থ বাড়ির মহিলাও। কেউ কলেজ ছেড়েছেন সবে, কেউ স্বামী সন্তান নিয়ে সংসার করেন। এঁদের মামলা দিয়ে জেলে ভরতে পারিনা। তাই উদ্ধার করে হোমে পাঠাই সেখান থেকে বাড়ি বা নিজস্ব ঠিকানায় চলে যান।’
একটি সূত্রে জানা গেছে উদ্ধার হওয়া মহিলার একটা অংশ নাবালিকা, বাংলাদেশি। প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়ে এই ব্যবসায় আসতে বাধ্য হয়েছে। শেষ পরিণতি কলকাতা সোনাগাছি। সেখানে সিকিউরিটি মানি জমা দিয়ে মহিলাদের এক সপ্তাহ বা ১৫দিনের জন্য আনে দালালরা। এরপর হোটেলে হোটেলে ঘুরিয়ে ব্যবসা করে ফের কলকাতায় ঠিকানায় ফেরত পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টাকার চাহিদা আছে এমন মহিলাদের জোগাড় করে দালাল বা আড়কাঠির দল। হোটেলের মালিক এই দালালদের মারফৎই মহিলাদের হোটেলে এনে তোলে। এক দিন অথবা এক রাত হোটেলে থাকে। দালাল এবং হোটেল মালিক মারফৎ খদ্দের আসে হোটেলে। মহিলার ছবি দেখে দরদাম হয়। কেউ হোটেলেই মহিলা সঙ্গ লাভ করে, কেউ আবার গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায় আরও দামি হোটেল, বাগানবাড়িতে। কেউ কেউ হয়ত একেবারেই উপায় নেই বা কোনও চক্রে পড়ে এই ব্যবসায় এসেছেন কেউ আবার গৃহস্থবাড়ির মেয়ে কিংবা গৃহবধূ। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে নিতান্ত মাঝারি মাপের এই হোটেলগুলি এক সময় ট্রাক, লরি বা বিভিন্ন মালবাহী গাড়ির চালক, সহায়ক ইত্যাদিদের খাবার জায়গা হিসাবে শুরু হয়। পরে এরা বার, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি খুলে বসেছে। কেউ কেউ দোতলা করে রুম তৈরি করেছে এবং এই ব্যবসা খুলে বসেছে। লকডাউনে খুবই মার খেয়েছিল এদের ব্যবসা। এখন তাই ঢালাও মহিলা ব্যবসায় নেমেছে। পুলিশ এই ঘটনায় ওই হোটেলের এক মহিলা ও পুরুষ অংশীদারকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা পাঁচবেড়িয়া বালুবস্তির বাসিন্দা।