নিজস্ব সংবাদদাতা: মূখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুলের কাপড় খুলে নিল পুলিশ! কুশপুতুলের খড়ের আঁটি নিয়ে চলল ছোঁড়াছুঁড়ি। আর অগ্নিদগ্ধ কুশপুতুলকে চলল পুলিশের লাঠিপেটা। কোনও বিক্ষোভকারী যদি কোনও ভিআইপির কুশপুতুল পোড়াতে চায় তবে তা নিবৃত্ত করতে পারে পুলিশ। অনেক সময় বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে কুশপুতুল কেড়ে নিয়ে তা সরিয়েও নিতে পারে পুলিশ। অর্থাৎ পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে ওই ভিআইপির আকার দেওয়া কুশপুতুলের সম্মান রক্ষা করা। কিন্তু কুশপুতুলের কাপড় খুলে নেওয়া বা তা নিয়ে ছোঁড়াছুঁড়ি, লাঠিপেটা সেই সম্মান কতটা রাখল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনা ঘটল মেদিনীপুর শহরে।
বুধবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) দুর্নীতি নিয়ে ধুন্দুমার কলকাতার রেশ এসে পড়েছিল বৃহস্পতিবারের মেদিনীপুরে। পুলিশে আর ছাত্রযুব বিক্ষোভকারীদের টানাটানি আর ধস্তাধস্তিতে সরগরম হয়ে রইল মেদিনীপুর শহর। সম্প্রতি SSC নিয়োগ নিয়ে আদালতে মুখ পুড়েছে সরকারের। কমিশন জানিয়ে দিয়েছেন তাঁদের সুপারিশ ছাড়াই নিয়োগ করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ। আর পর্ষদ বলছে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের সুপারিশ করেছে কমিশনই। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টির মধ্যে দুর্নীতির স্পষ্ট গন্ধ পেয়ে আদালত CBI তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। এতেই ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা। যদিও আদালত আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে CBI তদন্তে।
বুধবার নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রতিবাদে SSC র সদর দপ্তর ঘেরাও করতে গিয়ে ব্যাপক পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠন SFI এবং DYFI. তারই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরেও জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস অভিযান করে SFI-DYFI পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি। কয়েকশ
ছাত্রযুব কর্মী হাজির ছিলেন ওই কর্মসূচিতে। হাজির ছিলেন কলকাতার নেতারাও। SSC তে ঘুঘুর বাসা ভাঙো এবং দোষীদের কঠোরতম শাস্তি সহ বিচারের দাবী। এই শ্লোগান তুলে মেদিনীপুর কলেজের সামনে থেকে DI অফিস অভিযান শুরু করেছিল ওই দুই সংগঠন। সঙ্গে তাঁরা বহন করছিলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর কুশপুতুল। রাস্তায় পথ আটকায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়ে দেয় কুশপুতুল নিয়ে মিছিল করা যাবেনা। কথা কাটাকাটি শুরু হয় উভয় পক্ষে। দু’পক্ষই নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন। এরই মাঝে বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে কুশপুতুল ছিনিয়ে নিতে গিয়ে কুশপুতুলের কাপড় খুলে ফেলতে দেখা যায় পুলিশকে। কুশপুতুল চলে আসে পুলিশের হাতে। বিক্ষোভকারীদের নাগাল বাঁচাতে এক পুলিশ কর্মী থেকে অন্য পুলিশ কর্মীর মধ্যে চলে কুশপুতুল লোফালাফি।
যদিও শেষ অবধি নিজেদের দখলে রাখতে পারেনি পুলিশ। তা ফের চলে যায় বিক্ষোভকারীদের দখলে। ফের কুশপুতুলকে কাপড় পরিয়ে পোড়ান বিক্ষোভকারীরা। এবার জ্বলন্ত কুশপুতুল লাঠি পেটা করে পুলিশ। গোটা বিষয়টাই দৃষ্টিকটু লেগেছে পথচারী ও উপস্থিত দর্শকদের। এই ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও সতর্ক ও কৌশলী হওয়া উচিত ছিল বলেই মনে করছেন অনেকে। পথ চলতি এক ব্যক্তি জানান, ‘উনি আমাদের মূখ্যমন্ত্রী। যদি ওনার কুশপুতুল পোড়ানোটা অন্যায় বলে মনে করে পুলিশ তা’হলে সেই কুশপুতুলের কাপড় ধরে টানাটানিটাও সমান নয় তার চেয়ে অনেক বেশি অন্যায়।’