নিজস্ব সংবাদদাতা: পান সেবনকারীদের জন্য বিখ্যাত খড়গপুর। গোটা শহর জুড়ে এত পান দোকান বাংলার অন্য কোনও শহরে বিরল। শুধু বাজার নয়, এ শহরের গরিব মধ্যবিত্ত কিংবা সমৃদ্ধশালী বসতি এলাকার অলিতে গলিতে পানের দোকান। বস্তি থেকে শপিংমল সর্বত্রই পানের জয়জয়কার। দামের দিক থেকেও খুবই সস্তা খড়গপুর শহরের পান। বোগদা এলাকায় এখনও সাধারণ জর্দা পান ১০টাকায় ৪টি। আরও সস্তায় পান সেবন করতে হলে পাঁচবেড়িয়া কিংবা ভগবানপুর চলে যেতে পারেন। এখানে জর্দা মেশানো সাজা পান ২টাকায় পাওয়া যায়। কিন্তু পানের সঙ্গে যে জর্দা ব্যবহার করা হয় তা সব জায়গায় যে গুনমানে উন্নত এমনটা নয়। শহরে অনেক সময়ই নকল জর্দা ব্যবহারের অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হল এবার। সোমবার খড়গপুর শহরের একটি গোপন আস্তানায় হানা দিয়ে প্রচুর পরিমান নকল জর্দা, তরল রাসায়নিক, তামাক পাতা সহ লক্ষ লক্ষ টাকার সামগ্রী উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ১জনকে।
খড়গপুর শহর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সোমবার রাতে খড়গপুর শহরের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুর মাঠ পাড়া এলাকার জর্জ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির গো-ডাউনে হানা দিয়ে উদ্ধার হয়েছে সুরভি, শিবদাতা, গোপাল, রত্না ইত্যাদি বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের প্রচুর পরিমান কৌটো, কন্টেনার, পাউচ। মিলেছে কৌটোর উপরের অংশের টিনের ঢাকনা, পলিথিন ক্যাপ ইত্যাদি। এছাড়াও পাওয়া গেছে কুচানো তামাক পাতা ও গন্ধ মেশানো রাসায়নিক। উদ্ধার হওয়া ওই রাসায়নিক পদার্থ তামাকের সঙ্গে মিশিয়ে নামী দামী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জর্দা হিসাবে খোলা বাজারের অপেক্ষাকৃত কমদামে ব্যবহার করা হত বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে মলয় সাহা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ব্যক্তির নামে ওই গোডাউন তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জানার চেষ্টা হচ্ছে জর্জ বিশ্বাস নামের ওই ব্যক্তি নিজেই ওই কারবার চালাতেন নাকি তাঁর গোডাউন ভাড়া নিয়ে ওই কেউ এই কারবার চালাত। ধৃত যুবক মলয় সাহা ওই কারবারের একজন কর্মচারী ছিল বলেই জানা গেছে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য পেতে চাইছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ শহরের কোন কোন এলাকায় এই জর্দা সরবরাহ করা হত এবং কোন কোন পানের দোকান এই জর্দা সংগ্ৰহ করত তাও জানার চেষ্টা করা হবে। বাজার মূল্যের চেয়ে কমদামে ব্যবহৃত এই জর্দাতে মিশ্রিত রাসায়নিক বেশ ক্ষতিকর বলে পুলিশ মনে করছে।