শশাঙ্ক প্রধান: গোবর্ধনপুর থেকে খড়গপুর শহর। নাই নাই করে ৪০কিলোমিটার। অতদুরে ডিউটি পড়েছে শুনেই মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ার সুরজিৎ মান্নার কিন্তু সেই ডিউটি যে তার কপাল ফিরিয়ে দেবে কে জানত? খড়গপুরে উল্টো রথের ডিউটি করতে এসে লটারির টিকিট কেটেছিল পিংলার সুরজিৎ মান্না আর তাতেই লেগেছে কোটি টাকা। ঘটনায় আনন্দে ফেটে পড়েছে পিংলা থানার গোবর্ধনপুর গ্রাম, খুশির হাওয়া পিংলা থানার সিভিক আর পুলিশ কর্মীদের। বন্ধু আর সহকর্মীদের আবদারে কয়েকদফা পিকনিকের জন্য রাজি হতে হয়েছে সুরজিৎকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে গোবর্ধনপুরের সুরজিৎ মান্না কয়েক বছর হল পিংলা থানায় সিভিক কর্মী নিযুক্ত আছেন। বাবা একজন প্রান্তিক কৃষক। শুরুতে সংসারের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত হলেও সুরজিৎ সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরিটা পাওয়ার পর মোটামুটি চলছিল সংসার। অভাব অনটন থাকলেও মাস গেলে ছেলের বেতনের কয়েক হাজার টাকায় কোনও মতে টিকে গিয়েছিল সংসারটা। কিন্তু খড়গপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন এলাকায় ছেলের উল্টো রথের ডিউটি বদলে দিল সব হিসাব। ওই দিন রাতে ডিউটি করার ফাঁকে রথের মেলা থেকে লটারির টিকিট কাটেন সুরজিৎ। আর সোমবারই জানতে পারেন ১কোটি টাকা জয়ী হয়েছেন তিনি।
সুরজিৎ মান্না জানিয়েছেন, “উল্টো রথের দিন খড়গপুর শহরে ডিউটি পড়েছে শুনে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের নিজেদের এলাকার আশেপাশেই রথ ও মেলা হয়। ইচ্ছা হয় আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সেই মেলাতে গিয়ে আনন্দ করি কিন্তু ৪০ কিলোমিটার দূরে ডিউটি করতে কার ভালো লাগে। দিনের বেতন হিসাব করলে তার চেয়ে অনেক বেশি যাতায়াত আর খাওয়া দাওয়াতেই খরচ হয়ে যায়। কিন্তু ডিউটি তো ডিউটি। না করে উপায় কী? তাই যেতেই হয়। ডিউটি করার ফাঁকে ফাঁকে মেলাও ঘুরেছি। ঘুরতে ঘুরতেই এক জায়গায় লটারির টিকিট বিক্রি হচ্ছে দেখে কিনে ফেলেছিলাম। সেই টিকিটে যে এক কোটি টাকা জিতে যাব স্বপ্নেই ভাবিনি।” তাঁর টিকিটে ১কোটি টাকা লেগেছে জেনেই আনন্দে আত্মহারা সুরজিৎ। খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রাম জুড়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে! সুরজিৎয়ের ইচ্ছা একটা পাকাবাড়ি করে মা-বাবাকে ভালো করে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়া। এখন সুুুরজিৎ বলছেন, ” ভাগ্যে খড়গপুরে ডিউটি পড়েছিল!”