Saturday, July 27, 2024

Midnapore: সবংয়ে রাতারাতি ২০ ট্রাক্টর নামালো ভেড়ি মাফিয়ারা! জমি বাঁচাতে ভূমিদপ্তরে কৃষকরা

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার রামভদ্রপুরে কৃষিজমিতে ভেড়ি তৈরি করতে মরিয়া ভেড়ি মাফিয়ারা রাতারাতি ১৫/২০টা ট্রাক্টর নামিয়েছে আর তাদের সমর্থন দিচ্ছে শাসকদল ও পুলিশ, প্রশাসন এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার সবং ব্লক ভূমি রাজস্ব দপ্তর ঘেরাও করে তুমুল বিক্ষোভে সামিল হলেন রামভদ্রপুর কৃষি জমি বাঁচাও আন্দোলনকারী কৃষক পরিবারের সদস্যরা।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে
জমি খোঁড়ার জন্য ট্রাক্টর জড়ো করা হচ্ছে

কৃষকদের অভিযোগ তিন ফসলী কৃষি জমিকে মাছের ভেড়িতে পরিণত করার স্বপক্ষে এক দিকে যেমন জোর করে আগ্নেয় অস্ত্র দেখিয়ে ভেড়ী তৈরীর চুক্তিপত্রে সই করাচ্ছে সিন্ডিকেট বাহিনী। অন্যদিকে জাল কাগজপত্র তৈরি করে ওই ভেড়ি মাফিয়াদের পাশে দাঁড়াচ্ছে ভূমি সংস্কার দপ্তর।

উল্লেখ্য রামভদ্রপুর মৌজার ৪৩৬ একর কৃষি জমিতে জোর করে ভেড়ী তৈরী করার চেষ্টার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভেড়ি নির্মাণের বিরোধীরা। হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল ভেড়ী তৈরির কাজ বন্ধ রেখে জন শুনানি করতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই ভেড়ি নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে বলে অভিযোগ ছিল ভেড়ি বিরোধী কৃষকদের। কৃষকদের অভিযোগ, প্রথম দিকে একটি জেসিপি মাটি কাটার যন্ত্র নিয়েছিল ভেড়ি মাফিয়ারা।

শুরু হয়ে গেছে ভেড়ি তৈরির কাজ

কৃষকদের বিরোধিতায় থমকে ছিল কাজ কিন্তু ধীরে ধীরে প্রশাসনের সমর্থন জোগাড় করেছে তারা। রবিবার ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করেছিল কৃষিজমি রক্ষা কমিটি। আর তারপরই রাতারাতি গাদাগাদা ট্রাক্টর নামিয়ে কৃষিজমি খোঁড়ার কাজ শুরু করেছে মাফিয়ারা।

কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, হাইকোর্টের রায়ের পর থেকেই তিনফসলি কৃষিজমিকে অনুর্বর প্রমাণিত করার জন্য ধানের চারা উপড়ে ফেলা, রাসায়নিক ছড়িয়ে ধানের চারা নষ্ট করার কাজ চলছিল। প্রতিবাদে কৃষকরা রুখে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জন্য একটি দল শুনানির জন্য রামভদ্রপুর যায়। কিন্তু অভিযোগ সেই প্রতিনিধি দল প্রতিবাদী কৃষকদের সাথে দেখা ও কথা না বলে ভেড়ী সিন্ডিকেট বাহিনীর অস্থায়ী আস্তানায় যায়। সেখানেই খাওয়া দাওয়া করে এবং তাদেরই জোগাড় করে রাখা কিছু লোকজনকে প্রতিবাদী কৃষকদের নামে নকল সই স্বাক্ষর করিয়ে চলে আসে।

প্রতিবাদী কৃষকরা অভিযোগ করেন, তাঁদের পক্ষে তিন শতাধিক উপর কৃষক ভোর থেকে দুপুরে পর্যন্ত অপেক্ষা করে কিন্তু তাদের জমিতে হাজির থেকেও ওই প্রতিনিধি দল তাঁদের সঙ্গে দেখা করেনি। এরপরই দুপুরে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে সেই জমি থেকে প্রায় ১৪ কিমি রাস্তা দূরে সবং ব্লক ভূমি রাজস্ব দপ্তরে হাজির হোন রামভদ্রপুর মৌজার দুই শতাধিক কৃষক পরিবার। তারা প্রসাশনের এমন জালিয়াতি কাজ কর্মের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ঘেরাও বিক্ষোভে সামিল হোন। দাবী করে যে সমস্ত কৃষককের জবান নেওয়ার সই করা হয়েছে সেই তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ভেড়ি বন্ধ সহ কৃষি জমি বাঁচাতে আন্দোলনকারী কৃষকদের সাথে কেনো কথা না বলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আসা হলো তার জবাব চেয়ে বিক্ষোভ চলে।

ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে একটি অভিযোগ পত্র জমা সহ তার রিসিভ কপি দিতে বাধ্য হয় বিডিও দপ্তর। অভিযোগ, জনবিক্ষোভের ওই চেহারা দেখে মঙ্গলবার আবার সেই জন শুনানী করার ঘোষনা করতে বাধ্য হয় ভূমি দপ্তর। যদিও ভূমি সংস্কার দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘ যা কিছু করা হয়েছে তা সরকারি নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। একদিন ভেড়ির পক্ষে থাকা মানুষজনদের স্বাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অন্য দিন বিপক্ষে থাকা মানুষদের স্বাক্ষ্য নেওয়া হবে। এরপর আদালত যা বলবে তাই করা হবে।’

- Advertisement -
Latest news
Related news