নিজস্ব সংবাদদাতা: থরে থরে সাজানো সোনার হাত ঘড়ি, সোনার গহনা, মোবাইল, লাখ খানেক নগদ টাকা! সোনার মূল্য কত? হলদিয়ার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুল পাণ্ডে জানালেন, এখনও বাজার মূল্যে আমরা পরিমাপ করিনি তবে ৫০লক্ষ টাকার ওপরে হবেই! হলদিয়ার ব্রজলাল চকের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তিন মাস ধরে ছিল দিল্লির সীমাপুরী এলাকায় চুরিতে ট্রেনিং নেওয়া চোর। আদি বাড়ি নন্দীগ্রামের কেন্দেমারীতে। চোরের নাম দিল মহম্মদ। জন্ম আর বেড়ে ওঠা দিল্লিতেই, দিল্লিতেই মহাপেশায় হাতে খড়ি আর অন্ততঃ খান দশেক চুরি করেছে দিল্লিতেই। এ হেন দিল মহম্মদকে শুক্রবার ব্রজলাল চকের ভাড়া বাড়ির তিনতলা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ আর ওই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে অর্ধ কোটির বেশি টাকার গহনা ও ঘড়ি।
পুলিশ জানিয়েছে মাত্র ৩দিনের মধ্যেই এই চুরির কিনারা হয়েছে অদ্ভুত ভাবেই। গত ২৭শে এপ্রিল দিন দুপুরে চুরির ঘটনাটি ঘটে হলদিয়া থানার ক্ষুদিরাম নগরে। হলদিয়া পৌরসভার এক ঠিকাদার শম্ভু জানার বাড়িতে এই চুরির ঘটনাটি ঘটে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুবিধা নিয়ে সেই চুরি হয়েছিল এবং প্রচুর পরিমানে টাকা ও গহনা চুরি হয়। পুলিশ সেই ঘটনার তদন্ত নেমে জানতে পারে ঘটনাস্থলে এক ব্যক্তি বাইক নিয়ে সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা অবধি ঘটনাস্থলে ঘোরাঘুরি করছিল বেশ কয়েকবার। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় শম্ভু জানার এক প্রতিবেশী গোপনে বাইক সহ লোকটির ছবি তুলে রাখে। পুলিশ তদন্তে গিয়ে সেই ছবিটি পায়।
পুলিশের বক্তব্য, ওই ছবিতে বাইকটির অর্ধেক ছবি এসেছিল, নম্বর প্লেট বোঝা যায়নি কিন্তু এরপর পুলিশ ওই সময়ের কাছাকাছি ওই এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে আরও কয়েকটি জায়গায় ওই বাইকটির হদিস পায় এবং সেই সূত্র ধরে বাইকের মালিকের খোঁজ করতে গিয়ে দিল মহম্মদের নাম খুঁজে পায়। এরপরই দিল মহম্মদের ব্রজলাল চকের ভাড়া বাড়ির ওপর নজরদারি শুরু করে এবং গ্রেফতার করা হয় তাকে। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এই সব চুরির মাল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া চুরির সামগ্রী শুধুই শম্ভু জানার বাড়ির না হলেও একটি বড় অংশ ওই বাড়ির। এছাড়াও গত ৩ মাসে আশেপাশের থানা এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি চুরি করেছে সে। সে একাই চুরি করত নাকি আরও কেউ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে কোথায় সে চুরির সামগ্রী বিক্রি করত।
পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লিতেও ডজন খানেক চুরি করেছে দিল মহম্মদ। বেশ কয়েকটি মামলাও আছে তার নামে। দিল্লি পুলিশ তার খোঁজ শুরু করার পরই দিল্লি ছাড়ে সে। দিল্লির পুলিশ একবার নন্দীগ্রামের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল। সম্ভবতঃ সেই কারণেই নন্দীগ্রামের পরিবর্তে হলদিয়ায় এসে থাকতে শুরু করে এবং কৌশলগত কারনে ব্রজলালচকে থাকা শুরু করে কারন এখান থেকে আশপাশে থানা এলাকায় অপারেশন করার সুবিধা বেশি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে দিল্লিতে তার সব চেয়ে বড় আকারের চুরিটি হল একটি ২২লাখি বাইক চুরি।