Saturday, July 27, 2024

Tamluk: ছেলে-বৌমার সংসার থেকে ৭ বছর বিতাড়িত গর্ভধারিনী! কেন ঠাঁই দেবে প্রতিবেশী, ঝামেলা সেখানেও, বাসের নিচে ঝাঁপ বৃদ্ধার

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: ৭ বছর বিতাড়িত নিজের ছেলে আর ছেলেবউয়ের সংসার থেকে। ঠাঁই মিলেছিল প্রতিবেশী এক সহৃদয় পরিবারে কিন্তু ছেলে আর ছেলের বউ সেই প্রতিবেশীরও জীবন নাকাল করে দিয়েছে। একই গ্রামের মধ্যে মা অন্যের ঘরে রয়েছে। তাই ছেলে আর ছেলেবউয়ের নিন্দা আড়ালে আবডালে হয়েই চলে। প্রেস্টিজে বড় লাগে ছেলের তাই মা যাতে গ্রাম ছেড়েই চলে যায় তাই প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝামেলা, তাকে নাস্তানাবুদ করতে থানা পুলিশ। আর সহ্য হয়না মা’য়ের। তাই নিজেকে শেষ করে দিতে বাসের সামনে ঝাঁপ দিলেন বৃদ্ধা। রবিবার এমনই ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার চনশরপুরের। স্থানীদের তৎপরতায় প্রাণ বেঁচেছে বৃদ্ধের।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রবিবার সকালে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কে বাসের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ৭০ বছরের ওই বৃদ্ধা। তার আগে তাঁকে বেশ কিছু সময় ধরে রাজ্য সড়কের ওপর ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এরপর একটি যাত্রীবাহী বাসকে আসতে দেখে আচমকা ঝাঁপ দেন রাস্তার ওপর। শরীরের অসক্ততায় সফল হয়নি সেই ঝাঁপ। বাসের চালক দ্রুততার সাথে সামাল দেন ব্রেকে পা রেখে। ছুটে আসেন স্থানীয়রা, প্রাণরক্ষা হয় বৃদ্ধার। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বৃদ্ধার নাম পিয়ারী বেগম। ছেলে-বৌমার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েই আত্মঘাতী হতে চেয়েছিলেন তিনি।

গুণধর ছেলের নাম পিয়ার মহম্মদ আর ছেলের বৌ সুহানা বেগম। তাঁদের অত্যাচারে ৭ বছরেরও আগে সংসার ছাড়তে বাধ্য হন বৃদ্ধা। বৃদ্ধার সেই দুর্দশা দেখে তাঁকে নিজের বাড়িতে ঠাঁই দেন পড়শি জিয়াউর রহমান। কিন্তু সেখানেও শান্তি-স্বস্তিতে থাকতে পারছিলেন না বৃদ্ধা। তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে জিয়াউর ও তাঁর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে অশান্তি শুরু করে ছেলে আর ছেলের বউ। মাসখানেক আগে বৃদ্ধা সহ জিয়াউরের পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগও পুলিশে দায়ের করে তারা। আদালতে গিয়ে জামিন নিতে হয় তাঁদের। অভিযোগ, তারপরও জিয়াউরের পরিবারকে নানাভাবে হেনস্থা করছিল অভিযুক্তরা।

বৃদ্ধা জানান, তাঁর জন্য তাঁর প্রতিবেশী বিপদের মুখে পড়ছে এটা মানতে পারছিলেননা তিনি। বিবেকের দংশনে ভুগছিলেন। বাধ্য হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নিজে মরলে প্রতিবেশীতো বাঁচবে। বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ছেলে আর ছেলে বউয়ের অত্যাচার স্বত্ত্বেও তাঁর প্রতি কোনও বিরক্তি প্রকাশ করেননি জিয়াউর বা তাঁর পরিবার। বলেননি বাড়ি ছেড়ে দিতে। এরপরই কেঁদে ফেলে বৃদ্ধা বলেন, ‘ আমি আর অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। ঘর ছেড়েও শান্তি নেই। আমায় মরতে দিন। আমি বাঁচতে চাইনা।’ ঘটনার পর স্থানীয়রা বৃদ্ধাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বৃদ্ধা জেদ ধরে বসে থাকেন রাস্তার ওপরই। কাকুতি মিনতি করেন তাঁকে মরতে দেওয়ার জন্য। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তমলুক থানার পুলিশ।

সব কিছু শোনার পর পুলিশ পৌঁছায় বৃদ্ধার ছেলের বাড়িতে। তাঁদের থানায় যেতে বলা হয়েছে। স্থানীয় অনন্তপুর ২ গ্রাম-পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ আকবর আলি বলেন, ‘ আগেও স্থানীয়স্তরে বহুবার বৃদ্ধার সঙ্গে তাঁর ছেলে-বৌমার বিরোধ মেটানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। বৃদ্ধা যাতে সুষ্ঠুভাবে জীবনযাপন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’ একই দাবি গ্রামবাসীদের।

- Advertisement -
Latest news
Related news