Saturday, July 27, 2024

Midnapore: ‘চোর’ ছেলে ও তার বন্ধুদের সবক শেখাতে হাত পা বেঁধে মাটিতে ফেলে নির্মম মার বাবার ! পশ্চিম মেদিনীপুরে অমানবিক শাস্তি বিধানে বাবাকে গ্রেপ্তার পুলিশের

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: ছেলেকে শাসন কোন বাবা মা না করে কিন্তু তা বলে এমন শাস্তি? হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে তার ভেতরে লাঠি ঢুকিয়ে দেওয়া, যাতে বিন্দুমাত্র নড়াচড়া করতে না পারে। তারপর বাঁশের লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মার। শাস্তির এই ভঙ্গি দেখে আঁতকে উঠেছে পুলিশ। এক পুলিশ অফিসার বলেই ফেললেন, মাঝেমধ্যে একটু মারধর আমাদেরও করতে হয় বটে তা বলেআমরাও চোরকে এভাবে পেটাইনা। এতো একেবারে দুধের শিশুর দল!

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

দুধের শিশু না’হলেও একেবারেই বাচ্চা চারটি ছেলেকে নির্মমভাবে পেটানোর এই ঘটনায় আঁতকে উঠেছে গ্রামের বহুলোক কিন্তু এলাকার এই দাপুটে তৃনমূল কর্মীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেননি কেউ। উল্টে অনেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখেছেন। তারই মধ্যে কেউ কেউ লুকিয়ে ফোন করেছেন পুলিশকে। পাঠিয়েছেন শিশুদের নির্মমভাবে পেটানোর সেই ছবি। পরে পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার করেছে ওই নির্মম ‘বাবা’কে। বাবা অবশ্য পুলিশের কাছে বলেছেন, ‘পাড়ার লোকের অভিযোগ শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। অনেক বাবা বাছা করে বুঝিয়েছি কিন্তু কিছুতেই কিছু হওয়ার নয়। এবারও পাড়ারই এক ব্যক্তির ট্রাক্টরের যন্ত্রাংশ চুরি করেছিল ওরা। এরপর আর মাথার ঠিক রাখতে পারিনি।’

ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থানার নামো জবা এলাকায়। জায়গাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রান্তিক এলাকা বোস্টমমোড়ের কাছাকাছি। ওই গ্রামেরই রবিয়াল খান। এই ব্যক্তি এলাকায় বালি, মোরাম খাদানের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। এই ব্যক্তির বছর বারোর একটি ছেলে ও তার ৩ বন্ধুর বিরুদ্ধে ট্রাক্টরের যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ আনে প্রতিবেশী এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির ট্রাক্টরটি সরানোর জন্য কিছু যন্ত্রাংশ খুলে নামানো ছিল। তারই কিছু চুরি যায়। ব্যক্তির অভিযোগ চুরির পান্ডা রবিয়ালের ছেলে। তারা কিছু যন্ত্রাংশ চুরি করে তা বিক্রি করে দিয়েছে। রবিয়াল নিজেও জানিয়েছে যন্ত্রাংশ চুরি করে এরা বিভিন্ন প্যাকেট জাত খাবার লেস, কুড়কুড়ে জাতীয় খাবার কিনে খায় আর ওই খাবারের লোভেই ফের চুরি করে। তার নিজের ঘরেরও জিনিসপত্র ছেলে বিক্রি করে দেয় বলে রবিয়াল পুলিশকে জানায়।

শুক্রবার সকালে প্রতিবেশীর ওই অভিযোগ পাওয়ার পরই মাথা গরম হয়ে যায় রবিয়ালের। নিজের ছেলেকে প্রথমে চড় চাপাটি দিয়ে জানতে পারে ছেলের সঙ্গে আর কারাকারা ছিল। এরপর ছেলের ওই তিনবন্ধুকেও ডেকে পাঠায় রবিয়াল। এরপর একে একে চারজনের হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। একটি দড়ি দিয়ে একজনের দুহাতের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয় তার দু’পা। তারপর বাঁধা হাত-পা ও দেহের মাঝখানের অংশ দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বাঁশের লাঠি। এরফলে ওই নাবলকরা বসতে না পেরে গড়িয়ে পড়ে। তারপর শুরু হয় লাঠি দিয়ে মার। এরপর কয়েকজন গ্রামবাসীর সহায়তায় উদ্ধার ওই ছেলের দল। পুলিশ গ্রেফতার করেছে রবিয়াল খানকে। তার বিরূদ্ধে শিশু নির্যাতন বিরোধী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

- Advertisement -
Latest news
Related news