নিজস্ব সংবাদদাতা: ২দিনের সফরে পশ্চিম মেদিনীপুরের পর পাশের জেলা ঝাড়গ্রামে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরে সভা করে ঝাড়গ্রামে গিয়ে প্রশাসনিক সভা করেছেন তিনি। সেখানে তিনি বলেছেন, মাওবাদী নেই। তবে তাদের নামে হাতে লেখা পোস্টার সাঁটিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। তারই মধ্যে ফের ‘মাওবাদী’দের নাম দিয়ে পোস্টার পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। আর এবার পোস্টার পড়ল খড়গপুরের গ্রামে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/05/Screenshot_20220518-204826_Video-Player.jpg)
এদিন দুপুর অবধি মেদিনীপুর শহরেই ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন পোস্টার পড়েছে গভীর অথবা ভোর রাতে। ঘটনা খড়গপুর গ্রামীণ থানার অন্তর্গত পপরআড়া বাজারে। পোস্টারে ১০০দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, নির্মলবাংলা মিশনের আওতায় শৌচালয় ইত্যাদি প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করে জন আদালতে বিচার চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে সকাল ৬টা নাগাদ সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা ওই পোস্টার গুলি নজরে পড়েছে পপড়আড়া বাজার এলাকা জুড়ে। বাজারের বিভিন্ন দোকানের দরজা, কালভার্ট, দেওয়ালে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশকিছু পোস্টার। এলাকাটি খড়গপুর ২ ব্লকের অন্তর্গত পপড়আড়া ৬/১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন। ওই গ্রাম পঞ্চায়েত তৃনমূলের দখলে। পঞ্চায়েতের প্রধান নীলিমা ভূঁইয়া। তাঁরই বিরুদ্ধে পোস্টারে লেখা হয়েছে, দুর্নীতিবাজ প্রধানের জন আদালতে বিচার চায়। রক্ত চাই। নিচে লেখা আছে, লাল সেলাম বিকাশ মাওবাদী। খবর পেয়েই খড়গপুর লোকাল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই পোস্টার গুলো উদ্ধার করে।
পঞ্চায়েত প্রধান নীলিমা ভূঁইয়া বলেন, “আজ সকালে ছ’টার সময় পোস্টার পড়েছে বলে জানতে পারি। পোস্টারে ১০০ দিনের কাজ এবং শৌচালয় নিয়ে অভিযোগ তুলে লেখা আছে। নীলিমার দাবি তাঁকে হেয় করার জন্য, তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বিরোধীরা এই কাজ করছে। আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পুলিশ এসে আমার সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর পোস্টার নিয়ে গেছে। পুলিশ নিশ্চই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। জঙ্গলমহলে কাজ করেছেন এমন একজন পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘ মাওবাদীদের নাম করে পোস্টার দেওয়া হলেও এগুলির ধরন দেখে মনে হচ্ছে এই পোস্টার মাওবাদীদের নয় তাছাড়া খড়গপুরের গ্রামীন এলাকায় এখনও অবধি মাওবাদীদের অস্থিত্ব মেলেনি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কেউ বা কারা নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে বা প্রধানের ওপর রাগ থেকে এই কাজ করে থাকবে।”
ঠিক মুখ্যমন্ত্রী জেলায় থাকার সময় এই পোস্টার আদতে তৃনমূলেরই গোষ্ঠী কোন্দলের ফল বলে মনে করছেন বিরোধীরা। তাঁদের মতে ২০১১ সালের আগে তৃনমূল আর মাওবাদী একাকার হয়েছিল। ২০১১ পরে সেই মাওবাদীরাই আবার তৃনমূল। যেমন ছত্রধর মাহাত সহ একগুচ্ছ মাওবাদী নেতা তৃনমূল হয়ে গেছে। পঞ্চায়েতের কাটমানি এক গোষ্ঠী লুটেপুটে খাচ্ছে অন্য গোষ্ঠী পাচ্ছেনা। সেই খেয়োখেয়িরই বহিঃপ্রকাশ এসব। পুলিশ সঠিক তদন্ত করলেই সব বেরিয়ে আসবে। সামনে পঞ্চায়েতের নির্বাচন তার আগে টিকিট পাওয়ার লড়াই থেকেই এক গোষ্ঠী নেমে পড়েছে অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য গত ১ মাসে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মাওবাদীদের নামে পোস্টার দিয়ে ডজন খানেক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে।