নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবারের ছুটি বড় মর্মান্তিক হয়ে রইল কয়েকজন পড়ুয়ার কাছে। পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গভীর সমুদ্রে স্নান করতে নেমে এক যুবতী সহ মৃত্যু হল ২পড়ুয়ার। আরও ২জনকে কোনও মতে উদ্ধার করে প্রাণে বাঁচিয়েছেন সমুদ্রে কর্তব্যরত নুলিয়ারা। গোটা ঘটনাই বিভীষিকা হয়ে রইল মন্দারমনির পর্যটকদের কাছে। শনিবারই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমুদ্রে নামায় দিঘায় গ্রেফতার করা হয়েছিল এক পর্যটককে। ওল্ড দিঘার সমুদ্র ঘাটে জোয়ারের সময় সমুদ্রে নেমে তলিয়ে যেতে বসেছিলেন ওই যুবক। নুলিয়া এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করার পর পুলিশ গ্রেফতার করে ওই যুবককে। শনিবারের সেই ঘটনার পরও যে মানুষ সতর্ক হননি তারই প্রমাণ মিলল রবিবারের এই দুই মর্মান্তিক মৃত্যু।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সৈকত মন্দারমনিতে রবিবারই বেড়াতে এসেছিলেন ৮জন । মান্দারমনির হোটেল ক্লাসিকে ওই যুবতী সহ ৮ জন ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর তাঁদেরই কয়েকজন মিলে সমুদ্রে নামেন যার মধ্যেই ওই যুবতীও ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই দিন ৮ জন বন্ধু মিলে মান্দারমনির মোহনার কাছে স্নানে নামে। পুলিশ বারেবারে তাদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের কথা অমান্য করেই তারা উত্তাল ঢেউয়ের গতি বুঝতে না পেরে বেশ খানিকটা এগিয়ে যান তাঁরা। এর পরেই জলের তোড়ে হাবুডুবু খেতে খেতে তলিয়ে যেতে থাকেন ওই যুবতী এবং আরও ৩ যুবক।
তাঁদের সমুদ্রে ডুবতে দেখে চিৎকার জুড়ে দেন সেখানে উপস্থিত পর্যটকেরা। মন্দারমনি কোস্টাল পুলিশ সূত্রে জানা গেছে উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে দুই পর্যটককে উদ্ধার করে নুলিয়াদের স্পিড বোট। এর পর তাঁদের তড়িঘড়ি বালিসাইয়ের বড়রাঙ্কুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানে দুই পর্যটককেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে মৃত যুবকের সারিম সরফরাজ (২৩)। তাঁর বাড়ি বালিগঞ্জ এলাকায়। অন্যদিকে মৃত যুবতীর নাম সৃষ্টি গুপ্তা (২১)। সৃষ্টি ঝাড়খন্ড রাজ্যের দেওঘর এলাকার বাসিন্দা বলেই জানা গেছে। পুলিশের অনুমান এরা কোন কলেজ পড়ুয়া হতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শী পর্যটকরা জানিয়েছেন, ওই পর্যটকদের উদ্ধারে সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়ে নুলিয়ার দল। ইতিমধ্যে মৃতদের পরিবারকে খবর পাঠানোর পাশাপাশি দেহ দু’টিকে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য ২০১৮ সালেও এই মন্দারমনির সমুদ্রে নেমে তলিয়ে গেছিলেন রাজ্য পুলিশের ২কর্মী।