নিজস্ব সংবাদদাতা: গরীব মহিলাদের লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠল খড়গপুর পুরসভা থেকে দায়িত্ব দেওয়া এক মহিলার বিরুদ্ধে। অভিযোগ আরও যে ব্যাংকের সিলমোহর জালিয়াতি করে প্রায় ১ ডজন স্লেফ হেল্প গ্রুপের টাকা তছরুপ করেছেন ওই মহিলা। শনিবার খড়গপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুর এলাকায় সবিতা সমাদ্দার নামে ওই মহিলার বাড়ি ঘেরাও করেন প্রতারিত স্লেফ হেল্প গ্রুপের গরীব মহিলা সদস্যরা। যদিও ওই মহিলাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। বিক্ষোভকারি ওই মহিলারা অভিযোগ করেন এই ঘটনার পেছনে পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার এবং পুরসভার
স্লেফ হেল্প গ্রুপের দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিক তৃনমূল নেত্রী বৈশাখী বসাকও জড়িত রয়েছেন। যদিও ওই দুজনই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিক্ষোভরত মহিলাদের দাবি পুরসভার দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিক বৈশাখী বসাকই সবিতা সমাদ্দার কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ওই স্লেফ হেল্পগুলি থেকে টাকা নিয়ে তা ব্যাংকে জমা করার। তার ওপর ভরসা রেখেই প্রায় ১২ টি গ্রুপের মহিলারা সবিতা সমাদ্দার কে টাকা দিতেন ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য। সবিতা সমাদ্দার ব্যাংকের ডিপোজিট রশিদ ফেরত দিতেন কিন্তু একদিন হঠাৎ কেউ লক্ষ করেন ডিপোজিট স্লিপে থাকা ব্যাংকের সিলমোহর টি গোল আকারের। তাঁর মনে হয় ওই সিলমোহর আয়তাকার হয়। এরপরই ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ খবর করতেই জানা যায় তাঁদের খাতে কোনও টাকা জমা পড়েনি। পুরো টাকাই আত্মসাৎ করে নিয়েছে সবিতা সমাদ্দার। তার বাড়িতে নতুন এসি, ফ্রিজ, স্কুটি ইত্যাদি হয়েছে। সবিতা সমাদ্দার কে চেপে ধরলে সে গা ঢাকা দেয়।
৩১ শে অগাষ্ট ভবানীপুর মাঠপাড়া এলাকায় সবিতা কে দেখে ফেলে কয়েক জন মহিলা। তারা তাঁকে ধরে পুরসভায় নিয়ে যায়। তার মোবাইল আধারকার্ড ইত্যাদি নিয়ে নেওয়া হয়। পুরসভায় মিটিংয়ে হাজির ছিলেন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার, বৈশাখী বসাক, একজন পুলিশ কর্তাও। তাঁদের উপস্থিতিতেই ঠিক হয় ১ লা সেপ্টেম্বর সবিতা সমাদ্দার প্রথম কিস্তি হিসাবে ৩৪ হাজার টাকা মিটিয়ে দেবে। বৈশাখী বলেন সবিতার মোবাইল ইত্যাদি ফেরত দিয়ে দিতে। কিন্তু ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে সবিতার আর খোঁজ মেলেনি। বিক্ষুব্ধ মহিলাদের বক্তব্য, চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার এবং বৈশাখী বারবার সবিতার প্রংশসা করছিলেন। তারা সবিতাকে থানায় দিতে চাইছিলেন কিন্তু প্রদীপ সরকার ও বৈশাখীই তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। সেই সবিতা ওদের জন্যই পালাতে সক্ষম হল। এরজন্য মনে হয় এঁদের মধ্যে গোপন বোঝাপড়া রয়েছে।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান বলেন, আমি চেয়েছি কোনও ভাবে হলেও গরীব মানুষ তাঁদের টাকা ফেরত পান। তাই সবিতাকে রাজি করিয়েছিলাম। এখন সে পালিয়েছে। আমি এটুকু বলতে পারি এই প্রশ্নে পুরসভার যদি কোনও ভূমিকা বা যোগসূত্র থাকে আমরা বিষয়টি দেখব। দরকার হলে সবিতার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। বৈশাখী বসাক বলেন, এখানে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। সবার ব্যাংকে যাওয়ার সময় থাকেনা বলেই কাউকে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরকম আরও অনেককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবিতা প্রতারনা করেছে সে শাস্তি পাবে কিন্তু তার জন্য আমাদের দায়ী করা ঠিক নয়।