নিজস্ব সংবাদদাতা‘: তামিলনাড়ুতে জয়ললিতা প্রবর্তীত আম্মা ক্যান্টিন কিংবা কর্ণাটকের ইন্দিরা ক্যান্টিনের পর ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চালু করেছিলেন মা ক্যান্টিন। খড়গপুর শহরে সেই ক্যান্টিন আসতে সময় নিল প্রায় ১বছর। পৌর নির্বাচন দোর গোড়ায় আর তার আগে খড়গপুর শহরে চালু হল মা ক্যান্টিন। বৃহস্পতিবার খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের ঠিক প্রবেশদ্বারের মুখেই উদ্বোধন হয়ে গেল মা ক্যান্টিনের যেখানে ৫ টাকার বিনিময়ে ভাত, ডাল আর সবজির সাথে ডিমের ঝোলও পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক রশ্মি কোমল। জেলাশাসক জানিয়েছেন, ‘মেদিনীপুর শহরে আমরা আগেই মা ক্যান্টিন চালু করেছিলাম। আজ একই সাথে খড়গপুর ও ঘাটালে মা ক্যান্টিন চালু হল।’
সরকারের নিয়ম অনুযায়ী মা ক্যান্টিন চালু থাকার কথা বেলা সাড়ে ১২টা থেকে ৩ টা অবধি। আর সরকার এখানে মাথা পিছু ১৫টাকা অনুদান দিয়ে থাকেন। অন্ততঃ ১০০জন পরিষেবা পেতে পারেন সেই লক্ষ্য নিয়েই স্থান নির্বাচন করা হয়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকাটি যথোপযুক্ত। খড়গপুর পুরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকার জানিয়েছেন, ‘শুধু খড়গপুর শহর নয়, মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রুগী এবং তাঁদের পরিজনরা এখানে আসেন। রুগীরা হাসপাতালের খাবার পেলেও তাঁদের পরিজনরা বিশেষ করে যাঁরা দরিদ্র তাঁরা এখান থেকে খাবার নিতে পারবেন। এছাড়াও রিকশাওয়ালা, শ্রমিক ইত্যাদি সবাই এই সুযোগ পাবেন।’
এই প্রকল্পকে নির্বাচনমুখী প্রকল্প বলে কটাক্ষ করেছে শহরের বিরোধী দলগুলি। সিপিএমের খড়গপুর দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সম্পাদক অমিতাভ দাস বলেছেন, “‘২০২১ সালে শুরু হওয়া প্রকল্প খড়গপুরে আসতে ১বছর সময় লেগে গেল? আর যদিও এল একেবারে বেছে বেছে পৌর নির্বাচনের দোর গোড়ায়। এই যদি সরকারি উদ্যোগের হাল হয় তবে ভোট পেরুলে এই ক্যান্টিন থাকবে তো? ওঁরা বরং আমাদের শ্রমজীবী ক্যান্টিন গুলোর দিকে তাকান। বেসরকারি উদ্যোগে চালু হওয়া সেই ক্যান্টিনগুলি একটাও বন্ধ হয়নি।” বিজেপি রাজ্য কমিটির নেতা তুষার মুখার্জী কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘ ভোটের আগে জনগনকে ধোঁকা দিচ্ছে তৃনমূল। কতগুলো মা ক্যান্টিন চালু হয়েছিল আর এখন কটায় এসে থেকেছে তা জানাক সরকার।’
প্রদীপ সরকার হয়ত জানতেন এই প্রশ্ন উঠবে তাই আগে থেকেই বলেছেন, ‘আমরা অনেকদিন আগেই পরিকল্পনা করেছিলাম এই প্রকল্প চালু করার। কিন্তু জায়গাটা তৈরি করতে সময় লেগেছে কিছুটা। আমাদের লক্ষ্য ছিল যা করব এমনভাবে করব যাতে ভবিষ্যতেও চলে, বন্ধ না হয়ে যায়। সেই কারণে একটু সময় লাগল। আপাততঃ একবেলা চললেও ভবিষ্যতে আমাদের ইচ্ছা দু’বেলাই মানুষকে পরিষেবা দেওয়া।’