শশাঙ্ক প্রধান : ভয়াবহ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানা এলাকায়। জানা গেছে ডেবরা থানার ভরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দুই যুবতীকে গণধর্ষণ করেছে একাধিক ব্যক্তি। ওই যুবতীরা খড়গপুরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এও জানা গেছে যে ওই যুবতীরা একটি ডান্স গ্রুপের সদস্য। একটি অনুষ্ঠানের জন্য মহড়া দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। রাতে তাঁদের স্থানীয় এক মহিলার বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা হয়। গভীর রাতে দুষ্কৃতিরা ওই বাড়ির দরজা ভেঙে দুই যুবতীকে তুলে নিয়ে যায় স্থানীয় একটি পুকুরের পাড়ে। সেখানেই তাঁদের পরপর ধর্ষণ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাঁকে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় এখনও অবধি ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতের বেলায়।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের ২ নং ভরতপুর অঞ্চলের বৌলাসিনী ভগবানপুর এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। নাচের মহড়া শেষ করে এখানেই একটি মাটির বাড়ীতে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা হয়েছিল খড়গপুর ওই দুই যুবতীর। মোট তিন জন ওই বাড়িতে ছিলেন বলে জানা গেছে যার মধ্যে দুই যুবতীকে তুলে নিয়ে গিয়ে যায় দুষ্কৃতিরা। পুকুর পাড়ে নিয়ে গিয়ে লাগাতার গণধর্ষন চলে। সম্ভবতঃ এক যুবতীর ওপর বেশি যৌন অত্যাচার চালানোয় তিনি ভয়ঙ্কর রকমের অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই ঘটনার পর ওই তিনজনকে হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়।
সোমবার দুপুর নাগাদ ডেবরা থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় ওই মহিলা ও ব্যান্ডের এক যুবক। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্তরা বেশীর ভাগই ডেবরার বাসিন্দা। ওই ড্যান্স গ্রুপ মারফৎ জানা যাচ্ছে, খড়গপুর ২ব্লকের দুই যুবতী এবং কেশিয়াবড়ীর এক যুবতীর সাথে পিংলার দুই যুবক ছিলেন। এরা একটি নাচগানের দল বা অর্কেস্ট্রা পার্টি। মাড়োতলায় একটি বাড়িতে এরা নাচগানের মহড়া দেয়। বিকাল ৬ টা নাগাদ মহড়া শেষ হয়। তখন তাঁরা ফেরার বাস পাবেনা এই আশঙ্কায় কাঁসাই নদীর ওপারে ভরতপুর এলাকায় এক পরিচিতা মহিলার বাড়িতে আশ্রয় চান। ওই মহিলা একসময় এই দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মহিলা তাঁদের বাড়ি আসতে বলেন। ৩ যুবতী এবং ২ যুবক নদী পেরিয়ে মহিলার বাড়িতে হাজির হন। ওই মহিলা বিধবা, তাঁর ১৫ বছরের একটি ছেলে ও শ্বশুর রয়েছে। খুবই গরিব পরিবার। একটি মাত্র রুমে সবার থাকার ব্যবস্থা হয়। দুই যুবক ও মহিলার ছেলে ও শ্বশুর তক্তপোষে শুয়েছিল আর ওই মহিলা ও তিন যুবতী শুয়েছিল মেঝেতে বিছানা করে।
রাতে কয়েকজন যুবক ওই বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেয়। দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে ওই মহিলা ও তাঁর শ্বশুর ও ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় একটি ক্লাবে। সেখানে তাঁদের অভিযুক্ত করা হয় বাড়ির ভেতরে অসামাজিক কাজ চালানো হচ্ছে বলে। ব্যাপক মারধরও করা হয় এই পরিবারের সব্বাইকে। বাদ যাননি ওই মহিলাও। এরপর ওই তিন যুবতীকে তুলে আনার চেষ্টা করা হয়। এক যুবতী অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পালিয়ে দুরে চলে যান। বাকি ২যুবতীকে তুলে আনা হয় একটি পুকুর পাড়ের পরিত্যক্ত ঘরে। সেখানেই চলে বর্বরতা। পরপর একের পর একজন করে ধর্ষণ করে ওই দুই যুবতীকে। ভোরের দিকে ধর্ষণকান্ড শেষ করে যুবতীদের এলাকা ছাড়তে বলা হয়। যদিও পুলিশ এখুনি ধৃতদের নাম পরিচয় প্রকাশ করতে নারাজ। তাতে টিআই প্যারেড প্রভাবিত হতে পারে। তবে ধৃতরা স্থানীয় বলেই জানা গেছে।