নিজস্ব সংবাদদাতা: পুরভোটের আগে অভ্যন্তরীণ শক্তি বাড়ালো খড়গপুর সিপিএম। সিপিএম দাবি করেছে, দল ছেড়ে যাওয়া ১০জন পার্টি সদস্য যাঁরা ‘আমরা বামপন্থী’ খড়গপুরে ছিলেন ফের ফিরলেন দলে। শহরের ২০ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ওই ১০ জনের সাথে ফিরেছেন আরও ৭০জন মত সমর্থক। এরফলে ইন্দা এবং গোলবাজার সংলগ্ন ওয়ার্ডগুলিতে লড়াইয়ের জন্য সিপিএম বাড়তি সুবিধা পেল বলেই মনে করছে ওই এলাকার সিপিএম নেতৃত্বরা। সিপিএমের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, আরও অনেকেই দলে ফিরতে চাইছেন, ক্রমান্বয়ে এঁদের যুক্ত করা হবে। অন্যদিকে দলে ফের ফিরে এসে স্বস্তি বোধ করছেন ওই পুরানো কর্মীরা। তাঁরাও জানিয়েছেন, লড়াইয়ের রাস্তা আরও শক্তিশালী হবে। সব মিলিয়ে খড়গপুর শহর সিপিএম তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতাদের মুখে চওড়া হাসি।
শনিবার বিকেলে গোলবাজারের পার্শ্ববর্তী বিএনআর গ্রাউন্ড সংলগ্ন এই ঘর-ওয়াপসি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খড়গপুর শহরের বর্ষীয়ান শ্রমিক তথা সিপিএম নেতা কালী নায়েক, খড়গপুর শহর সিপিএমের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ এরিয়া কমিটির ৩ সম্পাদক সবুজ ঘোড়াই, মধুসূদন রায় এবং অমিতাভ দাস। সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিজয় পাল, জেলার মহিলা নেত্রী স্মৃতিকণা দেবনাথ প্রমুখ নেতৃত্বরা। এই এলাকা সিপিএমের খড়গপুর শহর ভূগোল বিভাজন অনুযায়ী পূর্ব এরিয়া কমিটির অধীন। সম্পাদক সবুজ ঘোড়াই বলেছেন, ‘ পৌর নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে এই পাওয়া আমাদের দলের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে চরম দুর্নীতিবাজ, শহরের উন্নয়নে ব্যর্থ তৃনমূল কংগ্রেস অন্যদিকে দরিদ্র মানুষকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন করে ধনীদের শাসন টিকিয়ে রাখার পক্ষে বিজেপি, এই দুই শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই আরও শক্তিশালী হল।’
এদিন ‘আমরা বামপন্থী’ থেকে ফিরে আসা এই এলাকার প্রাক্তন সিপিএম নেতা সুরজিৎ সমাদ্দার (সোনা), দীপক সাহারা জানিয়েছেন, ‘ দলের বাইরে গেলেও আমরা বামপন্থার আদর্শের বাইরে যাইনি। প্রতিটি লড়াই সংগ্রাম নিজেদের মত করে লড়েছি। যদিও সেই অভিজ্ঞতা আমাদের বুঝিয়েছে, আরও সঙ্ঘবদ্ধ, আরও শক্তিশালী লড়াই চাই। আর সেই লড়াই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়েই লড়তে হবে। তাই আবার আমরা ঘরে ফিরলাম। এখনও সিপিআইএম ছাড়া এমন কোনও শক্তি নেই যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ধর্মীয় বিভাজনের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই লড়তে পারে। তাই আমরা দলে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সঙ্গে আরও অনেকের কথা হয়েছে তাঁরাও দলে ফিরবেন।’
উল্লেখ্য ২০১৭ সালের সম্মেলনে খড়গপুর শহর এরিয়া কমিটি বিভাজিত হয়ে ৩টি কমিটিতে পরিণত হয়। এই সময় থেকেই দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কিছু প্রশ্ন তুলে খড়গপুর শহরে বেশ কিছু সিপিএম পার্টি সদস্য নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। পরবর্তী কালে খড়গপুর শহরে এক সাথে ১৬০জন পার্টি সভ্য তাঁদের সভ্যপদ পুনর্নবীকরন করাননি। এই অংশটিই ‘আমরা বামপন্থী খড়গপুর’ সংগঠন গড়ে তোলেন। এঁদের সাথে একটি বড় মাত্রার সমর্থকও সিপিএমের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে আসেন। বিধানসভা কিংবা লোকসভা নির্বাচনে এঁরা বামপ্রার্থীর হয়েই মিছিল মিটিং করেছেন পৃথকভাবে। নির্বাচন ছাড়াও সিপিএম মতালম্বী বিভিন্ন কর্মসূচিতেও এদের অংশগ্রহন করতে দেখা যায়। কিন্তু পৌর নির্বাচনে এঁরা কী করবেন সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। সিপিএমের এক নেতা অবশ্য আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ ঐক্যবদ্ধ লড়াই-ই হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল।’