নিজস্ব সংবাদদাতা: রাত পোহালেই খুলবে খাম, জানা যাবে কে হতে চলেছেন খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান। তার কয়েকঘন্টা আগেই কলকাতায় পৌঁছে তৃনমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র কুনাল ঘোষের হাত থেকে ঘাসফুলের পতাকা নিলেন খড়গপুর পুরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের বহিষ্কৃত সিপিআই কাউন্সিলর নার্গিস পারভীন। আর আগামীকাল, বুধবার খড়গপুরে কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি তৃনমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর হিসাবেই শপথ নিচ্ছেন বলে জানিয়ে দিলেন কুনাল ঘোষ। উল্লেখ্য দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য সোমবারই তাঁকে বহিস্কার করে
সিপিআই। তার আগে নার্গিস তৃনমূলে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃনমূল সভাপতিকে। জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা সেই চিঠি পাঠিয়ে দেন রাজ্য নেতৃত্বকে। তারপরই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে।
এদিন কলকাতায় নার্গিসের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়ার পর কুনাল ঘোষ বলেন, উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরবিষয়ক দলীয় নেতৃত্ব ফিরহাদ হাকিমের সম্মতিক্রমে ওনাকে তৃনমূল কংগ্রেসের একজন কর্মী হিসাবে গ্রহণ করা হল। আগামীকাল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উনি তৃনমূলের কাউন্সিলর হিসাবেই শপথ নেবেন। এদিন তৃনমূলের তরফে দাবি করা হয় এলাকার মানুষের চাপে তিনি তৃনমূলে যোগ দিচ্ছেন। যদিও ঘটনা এটাই যে তৃনমূলের বিরুদ্ধে গিয়েই মানুষ তাঁকে ৫হাজারেরও বেশি ভোটে জেতায়। শুধু তাই নয় এই ওয়ার্ডে তৃনমূল কখনও জিততে পারেনি। নার্গিস নিজে এবং তাঁর স্বামী সাইজাদ তৃনমূল প্রার্থী হয়ে দু’বার দাঁড়িয়ে দুবারই পরাজিত হন। গত নির্বাচনে এই ওয়ার্ড থেকে সিপিআই প্রার্থী হিসেবে জিতে তৃনমূলে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান সেক হানিফ। এবার তৃনমূল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তাঁর স্ত্রী যাকে সিপিআই প্রার্থী হিসেবে হারিয়েছেন নার্গিস।
যদিও এই ঘটনায় নার্গিসের চাইতেও সিপিআইয়ের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়। স্থানীয় বাম কর্মী ও সাধারণ মানুষ নার্গিসকে প্রার্থী করার পেছনে সিপিআইয়ের স্থানীয় নেতৃত্বের অপরিনামদর্শীতাকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের বক্তব্য এলাকায় সারা বছর ধরে যাঁরা লড়াই করেন সেই কর্মীদের বাদ দিয়ে তৃনমূল থেকে সদ্য দলে আসা মহিলাকে প্রার্থী করেছিল দল এবং সেটা করা হয়েছিল ধনী ব্যবসায়ী সাইজাদের টাকার জোরেই। উল্লেখ্য ২০০৫ ও ২০১০ পর্যায়ক্রমে তৃনমুল কংগ্রেস থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন নার্গিস এবং তাঁর স্বামী কিন্তু দু’বারই তাঁরা সিপিআই প্রার্থীর কাছে পরাস্ত হন। ২০১৫ সালে তৃনমূল এঁদের টিকিট না দেওয়ায় ২০১৯ সালে সিপিআইয়ে যোগ দেন এঁরা। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই কর্মীদের অভিযোগ ২০২০ সালে পৌর নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। টিকিট পাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা সিপিআইয়ে যোগ দেন। তারই মাশুল গুনতে হচ্ছে দলকে।