নিজস্ব সংবাদদাতা: ফেল কড়ি মাখো তেল নীতিতে চলছে মেদিনীপুর পৌরসভা। কাটমানি ছাড়া সরকারি প্রকল্পের সুযোগই মেলেনা গরিব, বস্তিবাসী নাগরিকদের। এমনই অভিযোগ তুলে সপ্তাহের প্ৰথম কাজের দিনেই বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন বস্তিবাসী কয়েক’শ পরিবার। তাঁরা জানালেন, আবাস যোজনা থেকে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, পানীয় জল, আলো সহ পয়ঃপ্রণালি ব্যাবস্থাপনা থেকে বঞ্চিত শহরের গরীব পরিবার গুলি। কাটমানি ছাড়া কোনও প্রকল্পই বাস্তবায়িত হয়না।
সোমবার মেদিনীপুর পুরসভার সামনে বিক্ষোভে সামিল রিন্টু সাহা, হেমন্ত সাউরা জানান, ‘আমরা খবর নিয়ে জানতে পেরেছি আমাদের ওয়ার্ডে ৩৯৮ জনের জন্য আবাস যোজনার বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু মাত্র ১০০টি পরিবার এই সুবিধা পেয়েছেন। বাকিরা পায়নি কারন তাঁরা কাটমানি দিতে পারেননি। আমফান, ফনি, যশ পের করে বর্তমান বর্ষায় ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে মানুষগুলিকে। করোনার পর থেকে আমরা রুটি রুজিরই জোগাড় করতেই হিমশিম। কাটমানির টাকা পাব কোথায়?
এই পরিবারগুলির বেশিরভাগই গৃহপরিচারিকা, রিকশা, ময়লাকুড়িয়ে জীবন যাপন করেন। এক গৃহপরিচারিকা মনিকা পড়িয়া জানান,’ এখনও অবধি করোনার একটি টীকা জোটেনি। পরিচারিকাদের ছুটি নেই। দিন দিন লাইনে দাঁড়িয়েও টীকা জুঠেনি। কাজে কামাই করলে, আবার টীকা না পাওয়ায় সেই কাজ চলে যায়। নতুন কাজ জোগাড় করতে হয়। টীকা করণ সহ আবাস যোজনায় বাড়ি, গরিব মানুষকে জমির স্বত্ত্ব প্রদান ইত্যাদি নানা দাবিতে পৌরসভা ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলে কয়েকঘন্টা।
বিক্ষোভকারীরা জানান, গৃহহীন ত্রিপল টাঙ্গিয়ে ভাঙাঘরে বসবাস কারীদের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়ার পরিবর্তে যাদের মাথার উপর ছাদ আছে তাদেরই পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে আবাস যোজনা। বড় অংকের দূর্নীতির চলছে। দীর্ঘ দিন দরে পুকুর দিঘির পাড়ে, বস্তি এলাকায় বাস করলেও এক টাকার বিনিময়ে বসবাসের জমি দেওয়ার কাজ এই সরকার ভুলে গেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প বয়স্কদের ভাতা, বিধবা ভাতা গত তিন মাস, কারোর চার থেকে ছয় মাস বকেয়া রাখা হয়েছে। এই মহামারি, লকডাউন সময়ে ভাতা আটকিয়ে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের নামে হায়রানি করারও অভিযোগ তুলেন বিক্ষোভ কারীরা। প্রতি বুথে ওয়ার্ডে দুয়ারে সরকার কর্মসূচী করার দাবী জানানো হয়।
বিক্ষোভ অবস্থান থেকে পৌর বাজেটের ২৫% টাকা বস্তি এলাকায় উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করতে হবে এমন দাবী জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক কমল ঘোষ, জয়ন্ত মুজুমদার ও পল্লব সরকার। প্রতিনিধি দল দাবী সনদ তুলে দেয় পৌর প্রসাশনের কাছে। গৃহ আবাস যোজনার বরাদ্দ সহ সেই প্রাপকদের তালিকা প্রকাশের দাবী জানান তাঁরা।