![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220210-WA0008.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: চায়ের দোকানের বচসা থেকেই হঠাৎ গুলি চালিয়ে দিলেন ব্যক্তি, লুটিয়ে পড়লেন অপরজন। চোখের সামনেই এমন ঘটনায় হতভম্ব উপস্থিত আড্ডাবাজরা। আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তকে বেধড়ক গণধোলাই দিল জনতা। আহত হয়ে সেই ব্যক্তিও হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনাচক্রে ২ জনের রাজনৈতিক অবস্থান ভিন্ন হওয়ায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকায়। মাস দুয়েক আগে এই থানা এলাকাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছিল এক যুবক। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে ঘিরে টান টান উত্তেজনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে এই ঘটনা পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকের বড় উদয়পুরের মনসাতলা বাজার এলাকার একটি চায়ের দোকানে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম তপন প্রধান। তপন স্থানীয় তৃনমূল কর্মী। অপর দিকে অভিযুক্ত সঞ্জীব নায়েক কট্টর বিজেপি সমর্থক।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2022/02/IMG-20220210-WA0006.jpg)
প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করার পর তপন প্রধানকে গুরুতর আহত অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ গনধোলাইয়ে আহত সঞ্জীবকে উদ্ধার করে পটাশপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করায়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি পিস্তল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে একটি চায়ের দোকানে আড্ডা মারছিলেন তৃণমূলকর্মী তপন প্রধান। ওই দোকানেই আড্ডা দিচ্ছিলেন প্রতিবেশী সঞ্জীবও। সঞ্জীব কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। আড্ডা চলতে চলতেই তপন ও সঞ্জীবের মধ্যে আর্থিক কোনও বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি ও বচসা শুরু হয়। আর এই বচসার মধ্যেই আচমকাই সঞ্জীব ছুটে গিয়ে দোকানের পাশেই রাখা নিজের গাড়ি থেকে পিস্তল নিয়ে এসে গুলি তপনের কোমর লক্ষ্য করে। তপন পড়ে যেতেই সঞ্জীব পালানোর উদ্দেশ্যে নিজের গাড়ির দিকে ছুটে গেলে উপস্থিত জনতা তাঁকে ধরে ফেলে এবং শুরু হয় গণধোলাই। গুলি চলার খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসছিল। তারাই উত্তেজিত জনতার হাত থেকে সঞ্জীবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক রঙ লেগেছে। তৃনমূলের তরফে ঘটনাটিকে রাজনৈতিক হামলা বলে দাবি করা হয়েছে। বিজেপি বলেছে পুরোটাই ব্যক্তিগত শত্রুতার জের।পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক উত্তম বারিক দাবি করেছেন, ‘‘ এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়েই ওই বিজেপি সমর্থক আমাদের দলীয় কর্মী তপনকে গুলি করে খুন করতে চেয়েছিল। পেছনে বড় ষড়যন্ত্র কাজ করছে। পুলিশ তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে ।’’ অন্যদিকে বিজেপির দাবি, সঞ্জীব তাদের সমর্থক হলেও কলকাতায় থাকেন এবং স্থানীয় স্তরে কোনও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত নয়। বিষয়টি পুরোপুরি ব্যক্তিগত রেষারেষি। বচসার জেরেই গুলি চলেছে যাতে আর তার থেকে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাইছে তৃণমূল।
উল্লেখ্য মাস তিনেক আগে ডিসেম্বরে এই থানারই বিশ্বনাথপুর গার্লস হাই স্কুল চত্বরে উদ্ধার হয়েছিল স বাপী নায়েক নামে এক গুলিবিদ্ধ যুবকের দেহ। পুলিশ জানিয়েছিল ডাকাতির ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই খুন হয়েছিল ওই দুষ্কৃতি। ঘটনায় বাপীর ৩ সাকরেদ গ্রেফতার হয়। বিজেপির অভিযোগ পুলিশের উদাসীনতা, নিষ্ক্রিয়তার জন্যই এলাকায় বোমা বন্দুক মজুত হচ্ছে, সমাজ বিরোধী কাজ বাড়ছে। সঞ্জীব কোথা থেকে ওই পিস্তল পেল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।